ফিলিপিন্সের পুলিশ তাদের মাদক বিরোধী অভিযানে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৩২জনকে হত্যা করেছে। সে দেশে প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থা নিয়েছেন।
মাদক চোরাচালান এবং ব্যবসার সাথে জড়িত সন্দেহে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যেভাবে মানুষকে হত্যা করা হচেছ, তাতে প্রেসিডন্টের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডেরও অভিযোগ উঠছে।
তবে তিনি যে তাতে আদৌ কর্ণপাত করছেন, গত ২৪ ঘন্টার প্রাণহানিতে তা মোটেই মনে হয় না।
রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে বুলাকান প্রদেশে পুলিশের এই অভিযান চলে ২৪ ঘন্টা ধরে। পুলিশ বলছে নিহতরা অবৈধ মাদক বিষয়ক অপরাধের সঙ্গে জড়িত যারা সশস্ত্র ছিল এবং পুলিশকে ঠেকাতে প্রতিরোধ তৈরি করে।
প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তে ২০১৬ সালে মাদকের বিরুদ্ধে তার লড়াই শুরু করার পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
অবৈধ মাদক ব্যবসা পুরো বন্ধ করার জন্য তার এই অভিযান আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে এত বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির কারণে। অতীতে মি. দুতার্তে বিচারবর্হিভূত হত্যাও অনুমোদন করেছেন।
মধ্যরাত পর্যন্ত চলা গতকালের অভিযানে একশোরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ অবৈধ মাদক ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন সাম্প্রতিকতম এই রক্তাক্ত অভিযান দেখে বোঝা যাচ্ছে মাদকের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট দুতার্তের লড়াই এখনও চলমান একটি প্রক্রিয়া।
গত মাসেই একটি জনসভায় তিনি মাদক ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি অপরাধীদের খুঁজে বের করে তার ভাষায় তাদের ‘জাহান্নমের রাস্তা’ দেখিয়ে দেবেন।
ম্যানিলা থেকে সংবাদদাতা জানাচ্ছেন অনেক পরিবার থেকে এমন অভিযোগ আছে যে তাদের পরিবারের সদস্যরা মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক অপরাধে জড়িত না হলেও অভিযানে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় লোকের গুলিতে প্রাণ দিতে হয়েছে।
পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত নানা হত্যার অভিযোগ সত্ত্বেও ফিলিপিন্সের বহু মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে স্বাগত জানিয়েছে।
অনেকেই বলেছে প্রেসিডেন্টের এই অভিযানের পর রাস্তাঘাট আগের থেকে নিরাপদ হয়েছে।
পুলিশের বিরুদ্ধে অনেকসময় এইসব হত্যার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলেও পুলিশ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে অস্ত্রের মুখে তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করলে তারা সন্দেহভাজনদের অস্ত্র দিয়ে মোকাবেলা করতে বাধ্য হয়।