গরুর উপর নিষ্ঠুরতার অভিযোগ এনে ভারতে বন্ধ করা হয়েছে গরু জবাই। এমনকি এর জন্য ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও কট্টরপন্থী হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের তথাকথিত গো-রক্ষক বাহিনীর হাতে বহু নিরপরাধ মানুষ হতাহত হয়েছেন। সামান্য অজুহাতে মুসলিম এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারা।
কিন্তু এবার ছত্তিশগড় রাজ্যের খোদ এক বিজেপি নেতাকেই পুলিশ গরুর উপর নিষ্ঠুরতার দায়ে গ্রেফতার করেছে। খবর বিবিসির
হরিশ ভার্মা নামের ওই নেতা একদিকে যেমন একটি পৌর এলাকার সহ-সভাপতি, তেমনই সরকারি অনুদান নিয়ে গোশালাও চালাতেন। সরকারি অনুদানের টাকার সম্পূর্ণ সদ্বব্যহারও তিনি করেননি বলেও অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে।
ছত্তিশগড়ের পুলিশ বলছে, রাজ্য গো সেবা কমিশনই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে -ভার্মা দুর্গ জেলায় যে গোশালাটি পরিচালনা করেন সেখানে গত কয়েকদিনে অন্তত ত্রিশটি গরু মারা গেছে।
সেই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরেই পশু নির্যাতন রোধ আইন, গবাদি পশু রক্ষা আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারা অনুযায়ী হরিশ ভার্মাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
গো হত্যার অভিযোগ ছাড়াও ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে গো সেবা কমিশন এটাও বলেছে, গোশালায় থাকা প্রায় ৫০০ গরু দেখভালের জন্য যে সরকারি অনুদান দেয়া হয়েছিল ভার্মাকে, সে অর্থও নয়ছয় করেছেন তিনি।
ভারতে এখন প্রায় ২৫ হাজার গোশালা রয়েছে, যার একটা খুব ছোট অংশই সরকারি অনুদান পায়। বাকি প্রায় ৯৫ ভাগ গোশালা হয় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা স্থানীয় কৃষকরা পরিচালনা করেন।
এগুলিতে যেমন নানা ধরণের গরু প্রজনন ও বিক্রির ব্যবস্থা থাকে, তেমনই বয়স হয়ে যাওয়া যেসব গরুকে পালন করতে অপারগ হন কৃষকরা- সেগুলো ওই গোশালাগুলিতে রেখে আসা হয়।
ভারতীয় গোরক্ষা দলের প্রধান পওয়ন পন্ডিত বলছিলেন বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে গত তিন চার বছরে প্রায় ৫ হাজার নতুন গোশালা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে।
তবে ছত্তিশগড়ের গোশালায় গরু-মৃত্যু নিয়ে পন্ডিত বলছেন- দেশের হাজার হাজার গোশালার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটিতেই এরকম ঘটনা ঘটলেও এটা ব্যতিক্রম সার্বিক চিত্র নয়।