নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এস এম ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ের মুখে জোর করে বিষাক্ত পদার্থ ঢুকিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তি (১৭) নামের ওই মেয়ে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রাপ্তি এ লেভেলে পড়াশোনা করছেন। গতকাল মঙ্গলবার সাত খুন মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এস এম ওয়াজেদ আলী জানান, প্রতিদিনের মতো কোচিং করে আজ সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিল তাঁর মেয়ে প্রাপ্তি। এ সময় দুই-তিনজন এসে প্রাপ্তির পথরোধ করে। তারা বলে, ‘তোমার বাবা সাত খুন মামলায় ভালো ভূমিকা রেখেছে। আসামিদের ফাঁসির রায় হয়েছে। সেই খুশিতে মিষ্টি খাও। এমন কথা বলতে বলতে জোর করে প্রাপ্তির মুখে বিষাক্ত পদার্থ ঢুকিয়ে দেয়। মুখে ওই জিনিস দেওয়ার পরই প্রাপ্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত প্রাপ্তিকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এস আই) বাচ্চু মিয়া জানান, ভর্তি করার পর চিকিৎসকরা দ্রুত প্রাপ্তির চিকিৎসা করছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ কে এম তারেক জানান, মেয়েটির পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়েছে। এরপর মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সাত খুন মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল ও ১১ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১১-এর চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত কমান্ডার এম এম রানা, চাকরিচ্যুত মেজর আরিফ হোসেন, হাবিলদার মো. এমদাদুল হকসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোডের খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের পাশ থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তাঁর সহযোগী সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণ করে র্যাব-১১। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল পৃথক দুটি মামলা করেন।