ঈদুল আজহার কোরবানির হাটে ওঠাতে খুব আদর-যত্নে রাজা বাবুকে বড় করেছেন স্কুলছাত্রী ইতি আক্তার ও তার বাবা-মা। এক বছরেই ষাঁড়টির ওজন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৯ মণ!
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের বাসিন্দা ইতির বাবা খান্নু মিয়া গত বছর ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে ফিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি কিনে আনেন। বাড়িতে ঢোকামাত্রই ইতি সেটির নাম দেয় রাজা বাবু। এখন সেই রাজা বাবুই সাটুরিয়ার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুতে পরিণত হয়েছে। ইতিদের পরিবারের জীবন-জীবিকার অবলম্বন ষাঁড়টিকে বিক্রি করে ভালো লাভবান হওয়ার আশা করছেন তার বাবা খান্নু মিয়া। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইতি বাবা-মায়ের পাশাপাশি অবসর সময়ে বেশ যত্ন নেয় রাজা বাবুর। ঈদের বাকি মাত্র আর সপ্তাহ খানেক। এ সময়ের মধ্যেই বিদায় দিতে হবে আদরের ষাঁড়টিকে। তাই বছরের অন্য সময়ের চেয়ে রাজা বাবুকে নিয়ে এখন অনেক বেশি ব্যস্ত ইতি। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গেলে ইতি আক্তার জানায়, রাজা বাবু নামে ডাকলেই সাড়া মেলে ওই ষাঁড়টির। ওর প্রতিদিনের খাবারেই ব্যয় হয় হাজার টাকার বেশি। তালিকায় থাকে কুড়া, ভূষির পাশাপাশি মিষ্টি লাউ, দেশি লাউ, সবরি কলা ও বিচি কলা, ছোলা, ভূট্টা, খড় ও কাঁচা ঘাস। ইতির মা পরিস্কার বিবি জানান, রাজা বাবুর মাথার ওপরে সব সময়ই ঘোরে বিদ্যুৎ চালিত দু’টি ফ্যান। বিদ্যুৎ না থাকলে নিজেরাই হাতপাখা দিয়ে বাতাস করেন। সকালে একবার পরিষ্কার করতে হয়, দুপুরে প্রতিদিন একই সময়ে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করিয়ে পুরো শরীর মুছে দিতে হয় খুব ভালোভাবে। দিনের বিভিন্ন সময়ে ব্যায়ামও করাতে হয় তাকে। খান্নু মিয়া জানান, গরু-ষাঁড় লালন-পালন ও দু’টি গাভির দুধ বিক্রি করেই চলে তার সংসার। রাজা বাবু ছাড়াও ছোট ছোট আরও দু’টি ষাঁড় গরুও রয়েছে তাদের। সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম জানান, কোরবানিতে বিক্রি করতে প্রায় ৭ হাজার গরুকে মোটা-তাজা করা হয়েছে। সর্বশেষ পরিমাপ অনুসারে রাজা বাবুর ওজন প্রায় ৩৯ মণ, যা উপজেলার সর্বোচ্চ। সাটুরিয়া উপজেলায় এমন বড় আকৃতির আর কোনো ষাঁড় নেই বলেও জানান তিনি।