মিয়ানমারের রাখাইনে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১২ জন সদস্যসহ ৭১ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবার সকালে পুলিশের ২০ টির বেশি ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে দেড় শতাধিক অজ্ঞাত লোক।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, জঙ্গিদের অনেকের কাছেই বন্দুক থাকলেও, বেশিরভাগ লোক হামলা চালিয়েছেন বাড়িতে বানানো বিস্ফোরক দিয়ে।
দেশটির সেনাবাহিনী বলছে, কিয়ার গ্যাং টং এবং নাট চাং গ্রামে এখনও সংঘর্ষ চলছে। সেনাবাহিনী এবং পুরিশ সদস্যরা যৌথভাবে বিদ্রোহী বাঙালিদের পিছনে হটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।’ রোহিঙ্গা মুসলমানদের বরাবরই বাঙালি বলে দাবি করে থাকে মিয়ানমার।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী দেশটির নেত্রী অং সান সুচি বলেন, ‘নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ১২ জন সদস্য এবং ৫৯ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে।’
সেখানকার একজন রোহিঙ্গা মোবাইলে এএফপির প্রতিনিধিকে জানান, ‘এখনও গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি। মারা যাওয়ার ভয়ে আর বাড়িতে যেতে পারছি না।’
চলতি সপ্তাহে কমপক্ষে তিন হাজার পাঁচশ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমারকে বিভক্ত করা নাফ নদীর কাছাকাছি কক্সবাজার এলাকায় ইতোমধ্যেই শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে অতিরিক্ত লোকজনে গাদাগাদি করে থাকছে। সেখানে আরও রোহিঙ্গা এসে আশ্রয় নিচ্ছে; ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে ১০ লাখের বেশি মুসলিম রোহিঙ্গার বসবাস। সরকার ওই অঞ্চলে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে এমন অভিযোগে সেখান থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা।
ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী ব্যাপক নিপীড়ন, হত্যা, গণধর্ষণ এবং গ্রামের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছে রোহিঙ্গারা।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে একই ধরনের হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাখাইনে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নিপীড়ন থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।
সূত্র : এএফপি