ফিচার

মিথ্যা অপবাদ দেয়ায় অপমানে সাতক্ষীরার স্কুল ছাত্রী রিমার আত্মহনন

By Daily Satkhira

August 26, 2017

আসাদুজ্জামান : মিথ্যা অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে সাতক্ষীরার স্কুল ছাত্রী রিমা খাতুন। এর আগে সালিশ করে তার বিচার করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছিল গ্রামের মোড়লরা। তার আগেই শনিবার ভোরে বাড়ির পাশে একটি আম গাছের ডালে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করেছে নবম শ্রেণির ছাত্রী রিমা। রিমা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি জাকির হোসেনের মেয়ে। সে একই গ্রামের মুজিবর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়তো। রিমার মা ফজিলা খাতুন জানান, এক মাস আগে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে পাশের বাড়ির মহব্বত আলি রিমার ঘরে ঢোকে। রিমা তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনা মহব্বতের বাড়িতে জানানো হলে মহব্বত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সে রিমার ক্ষতি করার জন্য রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এমনকি প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। ফজিলা খাতুন জানান, শুক্রবার রাতে রিমার প্রাইভেট শিক্ষক রেজাউল ইসলামকে বাড়িতে দাওয়াত করা হয়। রাতে রেজাউল ইসলাম এসে ঘরে খাওয়া দাওয়া করতে থাকেন। তিনি বলেন, এ সময় সবার অজান্তে মহব্বত আলি ওই ঘরের দরজার শিকল বাইরে থেকে লাগিয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেয়। সে প্রচার দেয় রিমা ও রেজাউল অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়েছে। পাড়ার লোকজন এসে রিমা ও রেজাউলকে ঘর থেকে বের করে। তিনি আরো জানান, এ সময় সেখানে উপস্থিত হন বল্লী ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের ভাই বিল্লাল, হাফিজুল ইসলাম এবং অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মিজানুর রহমানসহ অনেকেই। তারা সালিশ করে তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে রেজাউল সেখান থেকে গা ঢাকা দেন। এদিকে, শনিবার ভোরে রিমাকে দেখা যায় বাড়ির পাশে একটি আম গাছের ডালে নিজের ওড়নায় ঝুলতে। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। সালিশ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট বল্লী গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, রাতে আমাকে কয়েকজন লোক বাড়ি থেকে ডেকে আনে। ততক্ষণে সালিশ বিচার হয়ে গেছে। তবে কোনো টাকা লেনদেনের কথা শুনিনি। রিমার মা আরও জানান, সালিশ করে টাকা আদায় করা হবে এমন ঘোষণা দিয়েছিল বিল্লাল ও তার সহযোগীরা। এতে অপমান বোধ করে তার মেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ জানান, ময়না তদন্তের পর বিষয়টি তদন্ত করা হবে। মেয়েটির মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তারা ছাড় পাবে না।