আব্দুল জলিল : এফবিসিসিআইয়ের কাছে ২০ লাখ টাকায় সাতক্ষীরার দুটি ভোট বিক্রি করেছেন তিনি। এই অনৈতিক কাজ ছাড়াও তিনি সভাপতি হিসাবে সাতক্ষীরা চেম্বার ও ভোমরা বন্দর থেকে অন্ততঃ ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। নিজের এসব দুর্নীতির কারণে আগামি নির্বাচনে তার পরাজয় সুনিশ্চিত জেনে সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু সমঝোতার কথা বলে ভোট বন্ধ করানোর পাঁয়তারা করছেন। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক মত বিনিময় সভায় একথা বলেন সাতক্ষীরা চেম্বারের কয়েকজন পরিচালক। তারা বলেন, এখন তিনি মধ্যরাতে চেম্বার কক্ষে বসে থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের চোরাচালানিদের সাথে রোজ বৈঠক ও শলাপরামর্শ করছেন। মিঠু খান গডফাদারের কথা বলে পানি ঘোলা করে নিজের সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন জানিয়ে তারা প্রশ্ন করেন কে বা কারা গডফাদার তা সাতক্ষীরার মানুষ তো বটেই সাংবাদিকরা ভালোই জানেন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চেম্বার পরিচালক তাহমিদ শাহেদ চয়ন, এহসান বাহার বুলবুল, জাকির হোসেন লস্কর, আসাদুজ্জামান সেলিম, শাহিনুর রহমান বাবু, জাহিদুর রহমান, আবদুল্লাহ আল মামুন, মসিউর রহমান প্রমুখ ব্যবসায়ী। চার বার সভাপতি থাকা অবস্থায় নাসিম ফারুক খান মিঠু ভোমরা বন্দর থেকে সাত লাখ টাকা ধার নেওয়ার নামে তা আত্মসাত করেছেন। সিএন্ড এফ কর্তৃপক্ষ এখনও এই টাকা চেয়ে চিঠি দেয়। চেম্বার পরিচালকরা প্রশ্ন করেন সাবেক এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরের বাসভবনে থাই গ্লাস লাগানোর টাকা চেম্বার দেবে কেনো? তার বাসভবনের আলোক সজ্জার লাখ লাখ টাকাও বা কেনো দিতে হবে চেম্বারকে। অথচ মিঠু খান সাতক্ষীরা চেম্বার থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এসপিকে তোষণ করেছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা চেম্বারের নির্বাচন উল্লেখ করে তারা বলেন এ সংক্রান্ত সমিতির রেজুলেশন এবং গঠনতন্ত্র সরিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেছেন মিঠু খান। এখন তিনি গঠনতন্ত্র হারিয়ে গেছে এই দোহাই দিয়ে নির্বাচন না করার ষড়যন্ত্র করছেন। তারা বলেন মিঠু খান এতো ভালো মানুষ যে দেশে ওয়ান ইলেভেন কিংবা জরুরি অবস্থা জারি হলে তিনি সাতক্ষীরা ছেড়ে পালিয়ে যান। যদি কোনো ব্যবসায়ী তার টিন নম্বরসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যথাযথভাবে হাজির করে ভোটার হতে চান তিনি বিধি অনুযায়ী নিশ্চয়ই ভোটার হবেন। অপরদিকে কোনো জাল কাগজপত্র দিলে তিনি ভোটার হতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। ফলে যদি কেউ ব্যবসায়ীদের উৎসাহী করে ভোটার তৈরি করান তাতে কোনো দোষ নেই। চেম্বার পরিচালকরা বলেন ভোমরা সিএন্ড এফ থেকে ফরমালিন চিহ্ণিতকরণ মেশিন এবং চেম্বারের জন্য এসি কিনতে মিঠু খান প্রচুর টাকা নিয়েছেন। তিনি রোজই বলেন মেশিন আসছে, এসি আসছে এমনকি মার্বেল পাথরও আসছে। অথচ দিন যায়, মাস যায়, বছর যায় এসব জিনিস আর আসে না। এসব টাকা তিনি বেমালুম হজম করে ফেলেছেন। মিঠু খান দুই বছর আগে সাতক্ষীরা সরকারি বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলা থেকে চেম্বারের নামে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। এই টাকা েেথকে বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কার করে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তাও করেন নি। পুরো দশ লাখ টাকাই তিনি আত্মসাত করেছেন। তারা আরও বলেন মিঠু খান সভাপতি হিসাবে চেম্বারের নামে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা যেমন জমা করেন না তেমনি তার খরচও দেখান না । দুর্নীতি ফাঁস হবার ভয়ে তিন বছর ধরে এজিএম দেননা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন তিনি একজন মিথ্যাচারী ও স্বেচ্ছাচারী। তিনি সাতক্ষীরা চেম্বারের পক্ষে ইফতারি দেন নি এবার, এমনকি চেম্বারের লোগোটিও নিজের ইচ্ছা মতো পরিবর্তন করে স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন। নাসিম ফারুক খান মিঠু তার কূট চালের মাধ্যমে যে খেলা খেলছেন তাতে এবার চেম্বার নির্বাচন যথাযথভাবে হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন ‘আমরা তার দুর্নীতি ও ক্ষমতালিপ্সার ব্যাপারে প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি’। মত বিনিময় সভায় তারা আরও বলেন আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। ভোটের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক ধারার নির্বাচনে আমরা সমিতি গঠন করতে চাই। তাই মিঠু খানের নেতৃত্বে অশুভ চক্র যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সে জন্য সবার সহযোগিতার প্রত্যাশা করেন তারা।