কে এম রেজাউল করিম : মাত্রাতিরিক্ত বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় সখিপুর-দেবহাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই মহাসড়কের সখিপুর থেকে ঈদগাহ এবং দেবহাটা পর্যন্ত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সর্বপরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি গাড়ির এসএল ভেঙে পণ্য পরিবহনে ও যাত্রী সাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত ঈদগাহ সরুরাস্তা এলাকার আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে। তাছাড়া সখিপুর হতে উপজেলা সদরের একমাত্র সহজ রাস্তাটি নষ্ট হওয়ায় ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টির পাশাপশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সাতক্ষীরা শহরের পূর্বে বাকাল হতে কেন্দ্রীয় বাস টারমিনালের পাশ দিয়ে বয়ে চলা বাইপাস সড়কের জন্য বালু বহনকারী ট্রাক যাতায়াত করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন অনেকেই। সরেজমিনে দেখা যায়, সখিপুরের টেলিফোন টাওয়ার এলাকার আঃ রহিমের দোকানের পাশে কালভাট বসে ভয়ানক অবস্থা বিরাজ, ঈদগাহ বাজার এলাকা, রিপোর্টাস ক্লাব মোড়, মেসার্স মা স্টোর সম্মুখে, ঈদগাহ সরু রাস্তা, পাঁকড়াতলা, জোড়াপুকুরসহ বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তার পিচ উঠে মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। আবার গর্তের সৃষ্টির কারণে প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি ঈদগাহ সরু রাস্তা এলাকায় রাস্তার পিচ উঠে পুকুরের মত বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হলে ট্রাক চালকরা ইট দিয়ে চলাচলের উপযোগী চেষ্টা করলেও বিপরীত পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টিতে কাঁদা আর রৌদ্রে ধুলা-বালিতে জখম পথচারিরা। এমনকি পিচের রাস্তায় প্রায় আধা কিলোজুড়ে অসম্ভব কাঁদার সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত গাড়ি উল্টে যাচ্ছে এই স্থানটিতে। তাছাড়া যানবহন, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ সকল প্রকার বহন খুবই ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে। সড়ক নষ্ট হয়ে কাঁদায় চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ায় তীব্র যানজট লেগে থাকছে। বুধবার দুপুরে সরু রাস্তা এলাকায় অতিরিক্ত বালু বোঝাকৃত ট্রাকের এক্সেল ভেঙে যাওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষের। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইছামতি নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট হতে সাতক্ষীরা শহরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। কিন্তু এর মধ্যে দেবহাটা হতে সখিপুর মোড় পযর্ন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কে ছয় চাকার পণ্যবাহী ট্রাকের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা (গাড়ির ওজনসহ) ১০ টন। কিন্তু সেখানে ট্রাকে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ৩০-৩৫ টনের বেশি লোডের ট্রাক ও ট্রাক্টরে ম্যাধ্যমে বালু বহন করা হচ্ছে। চলতি মাসে এক জরিপে দেখা যায়, সড়কে প্রতিদিন সকাল হতে গভীর রাত পর্যন্ত ৩০-৩৫টি ট্রাক চলাচল করে। এসব ট্রাকের ওজন ৩০ থেকে ৩৫ টন। সাতক্ষীরা ও খুলনা থেকে বাইপাস সড়ক নির্মানের বালু বহনের জন্য এসব ট্রাকে বালু আনা হচ্ছে। এ ধরনের অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করায় রাস্তায় বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা রাজু আহম্মেদ বলেন, ভিতরের রাস্তায় কম লোডের ট্রাক চললে রাস্তার বেহাল দশা হতো না। এ ছাড়া সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগও পোহাতে হতো না। দেবহাটার সাদ্দাম হোসেন বলেন, শুনছি এই সড়ক দিয়ে না কি ২ বছর অতিরিক্ত ভারী ট্রাক চলবে। ট্রাক চালকরা বলছে যে, আগামি ২ বছর পরে রাস্তায় পিচের কোন চিহ্ন থাকবে না। অতি ব্যাস্ততম সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে, কিন্তু যেনো কেউই দেখছে না। উপজেলা প্রকৌশলী আলহাজ্ব হামিদ মাহমুদ বলেন, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাস্তার সয়েল সরে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে, রাস্তাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত বলতে পারবেন।