নিজের স্বভাবসুলভ আন্তরিক ভঙ্গিতে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে ঈদের অনুষ্ঠানে ‘ভালো করে খেতে’ বললেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
শনিবার বঙ্গভবনে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সিনহা বঙ্গভবনে পৌঁছান শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব শুরু হওয়ার বেশ খানিকটা পরে।
অন্যান্যদের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে করমর্দন করার সময়ে রাষ্ট্রপতি তাকে বলেন, “কী খবর? কেমন আছেন।”
প্রধান বিচারপতির উত্তরের পর রাষ্ট্রপতি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বঙ্গভবনের দরবার হল দেখিয়ে বলেন, “ভালো করে খাবেন।”
খয়েরি রঙের ‘স্লিম ফিট’ পাঞ্জাবি পরা বিচারপতি সিনহাকে এসময় হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। পরে প্রধান বিচারপতি বঙ্গভবনের দরবার হলে যান। শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের বঙ্গভবনের দরবার হলে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের রেষারেষির মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির এই সাক্ষাৎ নিয়ে অনেকেরই ছিল কৌতূহল।
প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে সেই ছবি নেওয়ার জন্য বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সনদের ব্যস্ততাও একটু বেড়ে যায়।
শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে ঘুরে অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এসময় অনেককেই তিনি ‘ঠিকমতো খেয়েছেন কি না’ জানতে চান।
ষোড়শ সংশোধন বাতিলের রায়ের আগে থেকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট নিয়ে নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের টানাপড়েন চলছিল। ওই রায়ের পর তা তীব্র হয়ে ওঠে।
বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সিনহা বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধানের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়ার বিধান সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলির ক্ষমতা এককভাবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে না থাকায় ‘দ্বৈত শাসন’ সৃষ্টি হচ্ছে মন্তব্য করে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল করে ১৯৭২ এর সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ ফেরানোর কথা বলে আসছেন প্রধান বিচারপতি।
এর প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাচ্ছেন।