স্পোর্টস ডেস্ক : আহা টেস্ট! ৩ উইকেটে ২৫০। ক্রিজে ওয়ার্নার। লিড কত বড় হবে সেই চিন্তায় বাংলাদেশ। তারপর ৩৭৬ রানে নেই ৯ উইকেট! এক উইকেট হাতে রেখে অজিদের ৭২ রানের লিড নেয়ার দিনে চট্টগ্রাম টেস্ট এমনই রঙ ছড়িয়েছে। আলোর স্বল্পতার কারণে শেষ উইকেট নিয়ে ব্যাট করতে হয়নি অজিদের। সকালে বৃষ্টি দিয়ে শুরু। তারপর ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্বের বিপদ জাগানিয়া জুটি। সাকিব যতক্ষণে সরাসরি থ্র’তে হ্যান্ডসকম্বকে (৮২) ফেরান ততক্ষণে তারা ১৫২ রান যোগ করে ফেলেছেন। সঙ্গীকে হারিয়ে ওয়ার্নার আরও ঠাণ্ডা হয়ে যান। পরিস্থিতির দাবি মেটাতে নিজের সহজাত মারকুটে স্বভাব ‘বলি’ দেন। টেস্টে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতিতে সেঞ্চুরি করেন। ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি করতে ২০৯ বল খরচ করেন। এর আগে ভারতের বিপক্ষে ২০১৪ সালে ১৫৪ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছিলেন। ২৩বছরে পা দেয়া মোস্তাফিজ ওয়ার্নারকে ফেরাতেই ভেঙে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার এই দল থেকে ওয়ার্নারকে বাদ দিলে ব্যাট করার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। গরম মাথাকে ঠাণ্ডা করে শুধু সেঞ্চুরিই করেননি, তিনটি মহাগুরুত্বপূর্ণ জুটিতে অবদান রেখেছেন। স্মিথের সঙ্গে ৯৩, হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে ১৫২, ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে ৪৮। ম্যাক্সওয়েল এদিনও শেষ বেলায় চালিয়ে খেলেন। কার্টরাইটকে (৩৮) নিয়ে ২৩ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান মিরাজ। বাংলাদেশি বোলাররা এদিন ভাগ করে উইকেট নিয়েছেন। আগের ম্যাচে উইকেটহীন থাকা মোস্তাফিজের শিকার তিনজন। মিরাজও ফিরিয়েছেন তিনজনকে। সাকিব আল হাসানকে আগের ম্যাচে পড়তে না পরা অজিরা এই ম্যাচে তার বল বেশ মন দিয়ে মোকাবিলা করেছেন। তিনি পেয়েছেন উইকেট। শেষদিকে কামিন্স আর অ্যাগার সাধ্যমতো রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাদের জুটি যখন ১৮ রানে তখনই মিরাজের প্রায় ৭৫ ডিগ্রি বাঁকের এক ঘূর্ণিতে ব্যাট শো না করে পায়ে লাগান কামিন্স। বল এতটাই দূরে পড়ে যে আম্পায়ার আঙুল তোলার প্রয়োজন মনে করেননি। কিন্তু মুশফিক পেছন থেকে অনুমান করেন এই বল স্টাম্পে লাগতো। রিভিউতে যাকে আনাড়ি বলে তাচ্ছিল্য করা হয় সেই মুশফিক চোখের পলকে থার্ডআম্পায়ার স্মরণ করেন। আলীম দার জানিয়ে দেন এটি আউট। ক্যাচ মিসের অভ্যাস এদিনও ছাড়েনি বাংলাদেশকে। সব মিলিয়ে ছয়টির মতো সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। শেষ বিকেলে শর্টস্লিপে সাকিবের বলে অ্যাগারের দেয়া সহজ ক্যাচ ছাড়েন দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার সৌম্য সরকার। পরে অবশ্য সাকিব ওই অ্যাগারকে বোল্ড করে ক্ষতি পুষিয়ে দেন। দিনের খেলা তখন বেশ কয়েকবার ওভার বাকি। অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করার স্বপ্নে বিভোর মুশফিকরা। মাঠের দুই ব্যাটসম্যান দাবি করেন, এই আলোতে ব্যাট করা সম্ভব নয়। আম্পায়াররাও তাতে সায় দেন। মুশফিকও আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে সায় দেন ওই আফসোস নিয়ে- যদি আরেকটু সময় থাকতো… আহা টেস্ট!