জাতীয়

আ. লীগের এমপির সভায় বোমা-গুলি, পাল্টা হামলা

By Daily Satkhira

September 07, 2017

নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) বেগম আয়েশা ফেরদাউসের প্রতিবাদ সভায় হামলা চালিয়ে বোমা নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১০ কর্মী আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছেন এমপি আয়েশা।

বুধবার দুপুর ২টার দিকে হাতিয়া উপজেলা সদরের লক্ষ্মীদিয়া এলাকার নিজ বাসভবনের চত্বরে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় এমপি আয়েশা বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

এদিকে হামলার পর দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ আলী রাতুলের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অভিযোগ তুলে এমপির সমর্থকরা ওই বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ওছখালীর সেকু মার্কেটে যুবলীগ কর্মী রিয়াজ উদ্দিনকে (৩২) কুপিয়ে আহত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। রিয়াজ হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ওয়ালীউল্লাহ পক্ষের কর্মী। হত্যার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রিয়াজের বাবা কোরবান আলী হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলীসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মোহাম্মদ আলী হাতিয়ার বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী।

স্বামীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ হত্যা মামলা করা হয়েছে অভিযোগ এনে এমপি আয়েশা ফেরদাউস তাঁর উপজেলা সদরের লক্ষ্মীদিয়া এলাকার বাড়িতে প্রতিবাদ সভা ডাকেন।  বেলা ১১টার দিকে সভা শুরু হয়। সভার শেষ দিকে দুপুর ২টার দিকে আয়েশা ফেরদাউস যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে বোমা নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। তারা বাসায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে সভার লোকজন ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় যুবলীগকর্মী মহিউদ্দিন (৩০), মো. ভুট্টু (২৮), আক্তার (২২), শাহেদ (৩০), মঞ্জু (২৭), ছায়েদসহ (২৭) অন্তত দশজন আহত হন। আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এমপি আয়েশার পক্ষের লোকজন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ালী উল্লাহ ও মাহমুদ আলী রাতুলের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। এই কারণে তাঁরাও রাতুলের বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।

উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হাতিয়ার ওছখালী বাজারে প্রধান সড়কে অবস্থান করেন। ঘটনাস্থলে রয়েছেন হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল করিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।

এদিকে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনায় এমপি আয়েশা ফেরদাউস, আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ালী উল্লাহ ও মাহমুদ আলী রাতুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুই পক্ষকে দুই দিকে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো মিছিল বা মিটিং না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।