কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকে ব্যাটিং ধসের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। মাঝে মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান ও মুমিনুল হকের প্রতিরোধ ছিল। তাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। লিওন ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের বিপর্যয়ে মূল অবদান রাখেন।
বেশিদূর অস্ট্রেলিয়াকে লিড নিতে না দিলেও দ্বিতীয় ইনিংসে লিওনকে নিয়ে ভয় ছিল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের, সেটাই সত্যি হলো। দুই ওপেনারের ব্যাট তো হাসেইনি। সাকিব আল হাসান ও নাসির হোসেনও ডুবেছেন হতাশায়। অসি স্পিনারের বোলিংয়ে প্রথম সেশনে ৪৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, যার তিনটিই ছিল লিওনের। এরপর সাব্বির ও মুশফিকের জুটিতে লিড নেয় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের বিপর্যয়ের শুরু সৌম্য সরকারের বিদায়ে। পুরো সিরিজে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি এ ওপেনার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ইনিংসে মাত্র ৯ রানে প্যাট কামিন্সের বলে রেনশর ক্যাচ হন সৌম্য। ১১ রানে স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে অসিরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে তার সর্বোচ্চ রান ৩৩, চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে। ঢাকা টেস্টে ৮ ও ১৫ রান করেছিলেন সৌম্য।
এরপর তামিম ৩৮ বল খেলে ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। লিওনের স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। দুটি চার রয়েছে এ ওপেনারের ইনিংসে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৯ রান করেছিলেন তামিম। কিছুক্ষণ পর ইমরুলকে ১৫ রানে শিকার বানান লিওন। এক্সট্রা কভারে সরাসরি ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দেন ইমরুল। আগের তিন ইনিংসে তার স্কোর ছিল ০, ২ ও ৪। সাকিবও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি। মাত্র ২ রানে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দেয় লিওনের শিকার তিনি। পরের ওভারে ও’কিফের বলে মাত্র ৫ রানে ফার্স্ট স্লিপে স্মিথকে ক্যাচ দেন নাসির।
সাব্বির-মুশফিক প্রতিরোধ গড়লেও এ জুটি ভাঙে লিওনের বলে। তাদের ব্যাটে ১১ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। ফিরে এসে আবার ব্যাটিং বিপর্যয়। দলকে ২৫ রানের লিড এনে দিয়ে লিওনের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন সাব্বির। ২৪ রান করেন তিনি। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ৫৪ রানের।
মুমিনুলকে বেশি সময় দিতে পারেননি মুশফিক। তার সঙ্গে ৩২ রান যোগ করেন বাংলাদেশি অধিনায়ক। কামিন্সের বলে ওয়েডকে তিনি ক্যাচ দেন ইনিংস সেরা ৩১ রানে। এরপর আরেকবার লিওনের আঘাত, মুমিনুলকে ২৯ রানে কামিন্সের ক্যাচ বানান তিনি। ১৪৯ রানে ঘটে ৮ উইকেটের পতন।
প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়ার পর মুমিনুলকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট পান লিওন। বছরের সবচেয়ে বেশি ৪৫তম উইকেটটি নিয়ে তিনি টপকে যান রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। ওখানেই শেষ নয়। ২৯ বছর বয়সী এ স্পিনার ইনিংসে তার ষষ্ঠ উইকেট পান তাইজুলকে ৪ রানে বোল্ড করে। ৭১.২ ওভারে মোস্তাফিজকে ফেরান ও’কিফ। নিজের দ্বিতীয় উইকেটটি নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের ইতি টানেন এ স্পিনার। মাত্র ৮৫ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা।
৩৩ ওভারে ১১ মেডেনসহ ৬০ রান দিয়ে ৬ উইকেট পেয়েছেন লিওন। ম্যাচে তার উইকেট ১৩টি। দুই ম্যাচে তার অর্জন ২২ উইকেট।