খেলা

বাংলাদেশের উৎসব থামিয়ে দিলো ইংল্যান্ড

By Daily Satkhira

October 08, 2016

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের উৎসব থামিয়ে মিরপুরের প্রথম ওয়ানডেতে টাইগারদের বিপক্ষে ২১ রানের জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের এ টুর্নামেন্টে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো ইংলিশরা। ইমরুলের ছয় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি। সাকিবের ঝড়ো ইনিংস। তারপরও শেষ রক্ষা হলো না টাইগারদের। ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে আসার দিনে সাকিব-ইমরুলের ৯০ বলে ১১৮ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপটিও যথেষ্ট হয়নি টাইগারদের জয়ে। সর্বোচ্চ ১১২ রান করেন ইমরুল। অনেক দিন থেকে দলে রিপ্লেস ওপেনার কিংবা টেষ্ট ক্রিকেটের তকমা গায়ে লেগে যাওয়া ইমরুলের এটি ইংলিশদের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে, এই ইংলিশদের বিপক্ষেই একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে ৯১ বলে ১২১ রানের ঝড়ো সেঞ্চুরি তুলে নেন এ বাহাতি। অবশ্য, আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় বছর বিরতিতে ইমরুলের শতক। আশা জাগিয়ে ২১ রানে হারের দিনেও ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে আসা হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া ইংলিশদের বিপক্ষে টিম কম্বিনেশনের দিকে হাত তুলেছেন কেউ কেউ। দলে তিন পেসার থাকতে কেনো পার্টটাইম স্পিনারদের বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে এই রকম স্পিন সহায়ক পিচে তিন পেসার খেলানোর যৌক্তিকতা। শাফিউল-মাশরাফি তাসকিনের মধ্যে শুধুমাত্র মাশরাফিই বল করেছেন পুরো দশ ওভার। এ ছাড়া তাসকিন করেছেন ৬ এবং শফিউল ৯ ওভার বল। শুরুতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ইংলিশরা নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান করতে সমর্থ হন। জবাবে ব্যাট করতে নামা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বাংলাদেশের একটা পর্যায়ে ১৫৩ রানে চার উইকেট হারায়। কিন্তু তামিম-সাব্বির-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের আসা যাওয়ার মধ্যে একপ্রান্তে অবিচল থেকে ব্যাট চালাতে থাকেন ইমরুল। পঞ্চম উইকেট জুটিতে সাকিবকে সঙ্গী করে ৯০ বলে ১১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ইমরুল। তবে ৪১তম ওভারে পরপর দুই বলে সাকিব এবং মোসাদ্দেক প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে আবারও চাপে পড়ে যায় টাইগাররা। দলীয় স্কোর তখন ৪১ ওভার তিন বল শেষে ২৭১ রান। ৩ রান বাদে মাশরাফি বাটলারের হাতে ক্যাচ দিলেও আশার আলো দেখাচ্ছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু দলীয় ২৮০ রানে সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসেন আশার আলো জ্বালিয়ে রাখা ইমরুল। রাশিদের স্পিনের ফাঁদে পড়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন ইমরুল। ফেরার আগে ১১৯ বলে ১১২ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন তিনি। তখনও ৩৪ বলে জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন ৩০ রান। ম্যাচের এমন টার্নিং মুহূর্তে তার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসাটাই চোখে লেগে থাকবে টাইগার ভক্তদের। এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুরুতেই টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। তার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করে মাত্র ৭.২ ওভারেই ৪১ রান তুলে নেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় এবং জেমস ভিন্স। শাফিউল অষ্টম ওভারে টাইগার দলপতি অধিনায়ক মাশরাফির তালুবন্দী হন ভিন্স (১৬)। এরপর মাত্র ২২ রানের ব্যবধানে জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো বিদায় নিলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে চাপে পড়ে যায় ইংলিশ ব্যাটিং লাইন-আপ। ১২তম ওভারে হার্ডহিটার জেসন রয়কে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে বড় স্বস্তি নিয়ে আনে সাকিব আল হাসান। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে স্কোর বোর্ডে জমা হয় ৪১ রান। পরের ওভারেই রান আউটের স্বীকার হন বেয়ারস্টো। মিড অফে ঠেলে দিয়ে দ্রুত রান নিতে চেয়েছিলেন বেয়ারস্টো। কিন্তু সেখানে দাঁড়ানো সাব্বিরের ক্ষিপ্রতার কাছে হার মানতে হয়। এরপরই ইংলিশদের হাল ধরেন দুই বেন। তারা দু’জনে ১৫৩ রানের জুটি গড়েন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন বেন স্টোকস। অন্যদিকে অভিষিক্ত বেন ডাকেট ফেরেন ৬০ রানে। তবে আজ তাদের দু’জনের জন্য-ই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে টাইগার ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ এবং মোশাররফের পিচ্ছিল হাত। তাদের বিদায়ে মঈন আলি ক্রিজে এলেও রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তবে তাতে খুব একটা ভুগতে হয়নি ইংলিশদের। বাটলারের ৩৮ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সামনে ৩১০ রানের টার্গেট দাঁড় করায় ইংলিশরা।