প্রেস বিজ্ঞপ্তি : বাংলাদেশের বিশিষ্ট জনেরা মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সে দেশে নিরাপদ স্থান চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন। অথচ নিজ জন্মভূমিতে দিনের পর দিন নির্যাতিত হিন্দুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কেউ কোন কথা বলেন না। বর্তমান সরকারের সময়েও হিন্দুরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকলে আগামি ৩০ বছরের পর এদেশে হিন্দু খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। শুক্রবার সকাল ১১টায় পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়ির নাট মন্দিরে বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদের সাতক্ষীরা সদর শাখার দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিশ্বনাথ ঘোষ এসব কথা বলেন। জয় মহাপ্রভু সংঘ ও জেলা মন্দির সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ আরো বলেন, আশাশুনির কচুয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছয় সদস্যকে মারপিট করে তাদের মোবাইল ও টাকা কেড়ে নিয়ে সার্বজনীন দুর্গা ম-পের পাঁচটি নির্মাণাধীন মূর্তি ভাঙচুর করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ঘোনা ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গনেশ সরকারের কলেজ পড়–য়া ছেলেকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এ মামলার একজন আসামিছাড়া সকলেই জামিনে মুক্তি পেয়ে বাদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ফলে ওই পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চলছে। শ্মশান ও মন্দিরের জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার মিলছে না। এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে সকল হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধভাবে একই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। নইলে আগামী শারদীয় দুর্গা পূজা শান্তিপূর্ণভাবে হবে না। প্রথম পর্বে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শাখার সভাপতি স্বপন কুমার শীলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অ্যাড. সোমনাথ ব্যানার্জী, রঘুজিৎ গুহ, জিতেন্দ্রনাথ ঘোষ, গোপাল ঘোষাল, নিত্যানন্দ আমিন, সুধাংশু সরকার, প্রাণনাথ দাস, বিকাশ দাস, রামপদ দাস, রায় দুলাল চন্দ্র, ঘোনা ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারনম্যান গনেশ সরকার সহ ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য বাবু ধীরু ব্যানার্জী। সভায় আগামি দুর্গা পুজা উপলক্ষে সদর উপজেলার ১০২টি ম-পে নিহত গৌতম সরকারের ফেস্টুন টানিয়ে প্রতিবাদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভার দ্বিতীয় পর্বে সর্বসম্মতিক্রমে স্বপন কুমার শীলকে পুনরায় সভাপতি ও অধ্যক্ষ শিবপদ গাইনকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। সহ-সভাপতি হিসেবে গোষ্ট বিহারী ম-ল, গোপাল ঘোষাল, প্রসাদ মজুমদার, রামপদ দাস ও জিতেন্দ্রনাথ ঘোষের নাম সর্ব সম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়। বাকি সদস্যদের নাম আলোচনা সাপেক্ষে খুব শীঘ্রই ঘোষণা করার কথা বলা হয়। সভা শেষে শুক্রবার বিকেলে বিশ্বনাথ ঘোষ, স্বপন কুমার শীল, অ্যাড. সোমনাথ ব্যাণার্জী ও শিবপদ গাইন আশাশুনির কচুয়া সার্বজনীন দুর্গা পুজা ম-পে যান। তারা ভাঙচুর করা প্রতিমা পরিদর্শন শেষে মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।