আসাদুজ্জামান : পাহাড়সম দুর্নীতির মাধ্যমে আশাশুনিতে একটি চক্র ৩৬টি প্রাইমারিতে দপ্তরী নিয়োগের চেষ্টা করছে। আর এ দুর্নীতি করার জন্য দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষও একজোট হয়েছে অপেক্ষাকৃত সৎ এবং পরীক্ষিতদের দূরে ঠেলে দিয়ে। কিন্তু বিধি বাম! প্রাথমিকভাবে এ নিয়োগ চেষ্টা স্থগিত করেছেন জেলা প্রশাসক।
মজার ব্যাপার হলো, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলে একই পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুদিন আগে একই অভিযোগ উঠেছিল এবং অসংখ্য পত্র-পত্রিকার ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এমনকি শহরের একটি স্কুলের সভাপতি নিজেই জানিয়েছিলেন, তার স্কুলে যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশই নেয়নি! কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ও প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, জন প্রতি ছয় লাখ থেকে আট লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগে সাতক্ষীরার আশাশুনির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে দফতরি কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব স্কুলের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে সেসব ফলাফলও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন এক নির্দেশে এ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল এবং যেসব বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়নি সেগুলি স্থগিত করেন। জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দীন জানান, বিষয়টি নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে নিয়োগ বোর্ডের কেউ কেউ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় খবরও প্রকাশিত হয়েছে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক পরীক্ষা গ্রহন করে এসব নিয়োগ বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির প্রধান আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানা জানান, এই নিয়োগ সংক্রান্ত পুরো কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আশাশুনির ৩৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি নিয়োগ নিয়ে “আড়াই কোটি টাকার দুর্নীতি” শীর্ষক একটি খবর প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত খবরে বলা হয় নিয়োগ সংক্রান্ত ছয় সদস্যের কমিটির কোনো কোনো সদস্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ছয় লাখ থেকে আট লাখ টাকা নিয়ে তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন। এই হিসাবে তারা দুর্নীতির মাধ্যমে কমবেশি আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখবর পেয়ে অনেক প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় হাজির না হয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। একজন প্রার্থী বিভিন্ন জায়গায় ঘুষের টাকা নিয়ে ঘোরাঘুরি করে ব্যর্থ হয়ে নিয়োগের দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন।