স্বাস্থ্য

ব্যথানাশক ব্যবহারে সতর্ক হোন

By Daily Satkhira

October 08, 2016

স্বাস্থ্য ডেস্ক: আমাদের দৈনন্দিন জীবনপ্রণালি ও খাদ্যে বিভিন্ন উপাদানের অভাব ব্যথানাশকের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে।  তাই কিছু হলেই ওষুধের  দোকান থেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই হরহামেশা ব্যথার ওষুধ খেয়ে থাকি আমরা। যে কারণে বা যেভাবেই ব্যথার ওষুধ খাই না কেন, এর ব্যবহারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অনিয়ন্ত্রিত বা মাত্রাতিরিক্ত ব্যথানাশক শরীরের বিশেষ ক্ষতি করতে পারে। ব্যথানাশক মূলত কাজ করে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরিতে বাধাদানের মাধ্যমে। প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন শরীর ফোলা ও ব্যথার জন্য দায়ী। ব্যথানাশক শরীরে সাইক্লো অক্সিজেনেস থেকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরি হতে দেয় না, ফলে ব্যথার অনুভূতি হয় না। কিন্তু প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন শরীরে ব্যথার অনুভূতিই শুধু জাগায় না, অন্য কাজও করে। এক ধরনের প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন আছে, যেটি পরিপাকতন্ত্রের উপরিভাগে প্রতিরক্ষামূলক আবরণ তৈরি করে। কিন্তু ব্যথানাশকের প্রভাবে এই প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরি না হওয়ায় মিউকাস লেয়ারে ক্ষত হয়। ফলে গ্যাস্ট্রিক ও ক্ষত বা আলসার হয়। কক্স-২ ইনহিবিটর নামের যে নতুন ব্যথানাশক বাজারে আছে, সেগুলো ব্যথার জন্য দায়ী প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন তৈরিতে বাধা দিলেও যে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন পরিপাকতন্ত্রে প্রতিরোধী আবরণ তৈরি করে তাকে বাধাগ্রস্ত করে না। ফলে গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হয় না। কিন্তু এ জাতীয় ব্যথানাশকে হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। আজকাল গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্ত থাকার জন্য ডাইক্লোফেনাকের সঙ্গে মিসোপ্রোস্টোল যুক্ত করে নতুন ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। মনে রাখা দরকার, মিসোপ্রোস্টোল গর্ভপাত ঘটায় এবং বিকলাঙ্গ শিশু জন্মানোর ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গর্ভবতীদের কখনোই এ ওষুধ দেওয়া উচিত নয়। ব্যথানাশক যথাসম্ভব ব্যবহার না করা উচিত যেসব ক্ষেত্রে তা হলো-

গর্ভাবস্থায়, শিশুকে বুকের দুধ দেন এমন মায়েরা, রক্ত পাতলা করার ওষুধ খেতে থাকলে, গ্যাস্ট্রিক বা আলসার থাকলে। ব্যথানাশকের অপব্যবহারে যে শুধু গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হয় তা নয়, এ থেকে রক্তক্ষরণও হতে পারে। মাথা ঘোরা, বমি, পাতলা পায়খানা, চুলকানি, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া প্রভৃতিও হতে পারে। হাঁপানি থাকলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। কিডনি ও যকৃতের সমস্যাও হতে পারে। তাই ব্যথানাশক ব্যবহারে একটু বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। অল্প ব্যথায় বরফ দিলে বা গরম সেঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়। ব্যথানাশক ওষুধ যদি খেতেই হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ও পরিমিত খাবেন। লেখক : শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল