জাতীয়

রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু

By Daily Satkhira

September 11, 2017

রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য সরকারীভাবে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে ২ হাজার একর জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে সব চেয়ে বড় আশ্রয় কেন্দ্র। আশ্রয় কেন্দ্রে ছাদ বা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে শনিবার।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজি আব্দুর রহমান জানান, সেখানে বেশ কিছু ঘর নির্মাণ করা হয়। একটি ঘরে ১২ পরিবার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে গভীর নলকূপ, টয়লটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ জানান, উখিয়া টেকনাফের বাইরে যেন রোহিঙ্গারা যেতে না পারে সে জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে ৩ টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ছড়িয়ে ছিঠিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নতুন আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে কাজ করছে প্রশাসন।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা এরই মধ্যে সাত লাখ ছাড়িয়েছে। গত ১৫ দিনেই বাংলাদেশে এসেছে প্রায় তিন লাখ শরণার্থী।

এছাড়া রাখাইনে চলমান অভিযানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা রাতারাতি দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।

৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৪শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।