সাতক্ষীরা

গ্রাহকদের নামে মামলা করে ফাষ্ট মাল্টিপারপাস সোসাইটির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজার তোপের মুখে

By daily satkhira

October 08, 2016

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহকদের নামে মামলা করে ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজার তোপের মুখে পড়েছে। সাতক্ষীরায় ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড ভিক্ষুকসহ একাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা ফেরত না দিয়ে এবার উল্টো গ্রাহকদের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হয়ে  শনিবার ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডর চেয়ারম্যান এস.এম. শরিফ-উজ জামান ও ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টাকা ফেরত পেতে বিক্ষোভ করে গ্রাহকরা। এ সময় গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়ে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়ে এ যাত্রায় রেহাই পাই এ প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা এ প্রতিনিধিকে জানান, অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত হিসেবে কোটি টাকা সংগ্রহ করে ২০১৪ সালের মে মাসে লাপাত্তা হয়ে যায়। গ্রাহকদের প্রতারণার পরেও বহাল তবিয়তে এসব প্রতারক চক্র। সাতক্ষীরায় বিভিন্ন নামে বেনামে গড়ে উঠেছে এসব কো-অপারেটিভ প্রতারণার কার্যক্রম। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ প্রতারক চক্র রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুক্তভোগীরা জানান, ২০১০ সালে এ প্রতিষ্ঠাটি যাত্রা শুরু করে। ডিপোজিট ডিপিএস’র নামে অধিক মুনাফার কথা বলে অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া হয় কয়েক লক্ষ টাকা। এক পর্যায়ে  প্রায় ২শ’ গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক রফিকুল ইসলাম ডিপোজিট করে ৮ লক্ষ টাকা, মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ডিপোজিটের নামে নেয়া হয় ২ লক্ষ টাকা, আব্দুর রশিদের ১ লক্ষ টাকা, ক্যাপ্টেন বাবু’র ১ লক্ষ টাকা, আব্দুর রহিম নামের আরেক গ্রাহকের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা, চায়ের দোকানী ছালেহা খাতুনের নিকট থেকে ৪ লক্ষ  ৩৫ হাজার টাকা, ভিক্ষুক সায়েরা বিবি’র কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এভাবে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে নতুনভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুক কাটিয়া টাউন বাজার সংলগ্ন শাহী মসজিদের পাশে তার হোমিও প্যাথিক চেম্বার বিসমিল্লাহ ক্লিনিকের উপর প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড খাটিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে গা বাঁচাতে ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এস.এম শরিফ-উজ-জামান রুমি কোন রেজুলেশন ছাড়াই স্থানীয় একটি পত্রিকায় অব্যাহতি জানান। তাদের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো গ্রাহকদের নামে এই প্রতিষ্ঠানটি সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭(গ) ধারায় মামলা করেছে। যার নং ৮২৫/১৬ (সাত)। শনিবার ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো- অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুকের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকরা টাকা ফেরত পেতে জমায়েত হয়। এ সময় ম্যানেজার প্রথমে মুখ খুলতে না চাইলে গ্রাহকদের তোপের মুখে টাকা ফেরত দেবে বলে আশ্বাস দেয়। তবে গ্রাহকরা বলছে ম্যানেজারকে আর পাওয়া যাবেনা। সে পালিয়ে যাবে। অপর দিকে গ্রাহকরা চেয়ারম্যান এস.এম শরিফ উজ-জামানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে সেও কথা বলতে না চাইলে ও পরে ক্যামেরার সামনে বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে সে টাকা ফেরত দেবে বলে জানিয়ে দেয়। শনিবার ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো- অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুকের ব্যাবসা গেলে সে বলে এসব বিষয়ে বিস্তারিত সমবায় অফিসার শেখ শফিকুল ইসলাম জানেন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান এস.এম শরিফ উজ জামানের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে গেলে সমবায় অফিসারকে সেখানে পাওয়া যায়। গ্রাহকরা বলছে আমাদের কে প্রতারণা করে সমবায় অফিসারকে বেতনা ট্রেডার্স থেকে টিভি এস মোটরসাইকেল উপহার দিয়েছে চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় আগে থেকে সমবায় অফিসার কেন বেতনা ট্রেডার্সে পাওয়া গেল? চলতি বছরের ১লা জুলাই সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর ছালেহা খাতুন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এস.আই দেলোয়ার সদর থানায় ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো- অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুক কে নিয়ে গ্রাহকদের  টাকা কিভাবে পরিশোধ করবে সে বিষয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় ম্যানেজার গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের জন্য তিন দিন সময় চেয়ে নেয়। এর পর থেকে সে লাপাত্তা হয়ে গেছে। লাপাত্তার ২ মাস পর গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো ২৭.০৯.১৬ তারিখে মামলা করে ম্যানেজার ডাঃ ওমর ফারুক। ওই মাল্টিপারপাসের চেয়ারম্যান এস.এম শরিফ-উজ জামান রুমি, ম্যানেজার শহরের কাটিয়া এলাকার সামছুর রহমানের ছেলে ডাঃ ওমর ফারুক ও  শেখ ফারুক আহমেদ বাবলু মূলত এই তিন জন মিলে প্রতারণার জাল বিছিয়ে  গ্রাহকদের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান গ্রাহকরা । ভুক্তভোগী ও সচেতন মহলের দাবী ফাষ্ট মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রতারণার নতুন ফঁদে যেন সাধারণ মানুষ না পড়ে। এ জন্য এ ধরনের প্রতারক চক্রদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এবং অসহায় গ্রাহকরা যাতে করে তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত পায় এবং জড়িত কর্মকর্তারা পালিয়ে যেতে না পারে এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।