মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ নিয়ে আসছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম রহিমপুর। স্থানীয় সময় বুধবার ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনা এই তথ্য জানিয়েছে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য ১৬০ টন ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হবে। এছাড়া শরণার্থীদের জন্য ভ্রাম্যমান হাসপাতালও স্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিনে দেখাই এ সফরের উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন ইব্রাহিম। এছাড়া ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। ইরান প্রথম থেকেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করে এসেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ইরানের রাজধানী তেহরানের মেহরাবাদ বিমান বন্দর থেকে কার্গো বিমানটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। আগামী শুক্রবার এসব ত্রাণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হাতে পৌঁছবে।
এদিকে বুধবার থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মিয়ানমারের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হত্যা-নির্যাতন বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন এআরএসএ এই হামলার দায় স্বীকার করে।
এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।