সাতক্ষীরা

পাউবো-১ এর সাথে সনাক’র মতবিনিময়

By Daily Satkhira

September 15, 2017

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-১ কর্তৃপক্ষ ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সাতক্ষীরার যৌথ আয়োজনে “চাই জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে পওর বিভাগ-১ এর সভাকক্ষে নিবার্হী প্রকৌশলী বি, এম, আব্দুল মোমিন এর সভাপতিত্বে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সনাক’র পক্ষ থেকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-১ এর আওতায় সকল কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চর্চার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে স্বপ্রণোদিত উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। সনাক সাতক্ষীরার জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন উপ-কমিটির আহ্বায়ক কল্যাণ ব্যানার্জি সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিতে রয়েছে বলে পওর বিভাগ-১ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষে নেয়ার পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় নাগরিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের কি কি কাজ হবে, কোথায় হবে, কিভাবে হবে, কতটুকু হবে, বরাদ্দ কত এসব বিষয়ে যাতে ভুল ধারণা বা প্রশ্ন না উঠে সেজন্য জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানীয় নাগরিকদের জানাতে হবে। দৃশ্যমান স্থানে এ সংক্রান্ত তথ্য বোর্ড স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে দেখবেন প্রকল্প বাস্তবায়নে একদিকে জনগণের সহযোগিতা যেমন পাওয়া যাবে অন্যদিকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিতিার বিষয়টিও নিশ্চিত করা সহজ হবে। সনাক সদস্য মো. অলিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সম্পর্কে প্রশাসন তথা সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব খারাপ ধারণা রয়েছে যে, এই প্রতিষ্ঠান তাদের দায়িত্বে অবহেলা করে। আমরাও দেখি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার পর মেরামত করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আগে সংস্কার করতে অসুবিধা কোথায়? পাশাপাশি কোন বাঁধ ভেঙ্গে গেলেই পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয় বাপাউবো’র সাথে বার বার যোগাযোগ করলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।’ তিনি বাপাউবো কর্তৃপক্ষকে নিজ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পত্রিকায় ভাল খবর যাতে প্রকাশ পায় সেজন্য সুনামের সাথে কাজ করতে বাপাউবো’র পক্ষ থেকেই ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। বাপাউবো উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমান জানান, বাপাউবো’র হাতে তাৎক্ষণিক কাজ করার জন্য কোন বরাদ্দ থাকে না। এজন্যই আমাদের কাজ করতে বিলম্ব হয়। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু বরাদ্ধ দ্রুত সময়ের মধ্যে না আসায় বাঁধ সংস্কার করতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের আগে কাজ করলে পরে বরাদ্দ আসে। বরাদ্দের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। নিবার্হী প্রকৌশলী বি, এম, আব্দুল মোমিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং-১ এর পুনর্বাসন প্রকল্পের ১১টি পেকেজে গড়ে ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সম্পন্ন কাজের বিপরীতে ৪২ ভাগ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এখনও প্রায় ৫৮ ভাগ কাজের বিল বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড় না পাওয়ায় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আগে প্রকল্পের কাজের তথ্য বোর্ড দেয়া হতো না। কারন এজন্য বরাদ্দ রাখা হতো না। টিআইবি’র পরামর্শকে ইতিবাচক ভাবে নিয়ে এখন প্রতিটি কাজের তথ্য উন্মুক্ত রাখতে তথ্য বোর্ড স্থাপন করা হচ্ছে, অফিসে সিটিজেন চার্টার দেয়া হয়েছে, কেউ তথ্য জানতে আবেদন করলে তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, আইলা পরবর্তি নতুন কোন প্রকল্প আসেনি। পওর বিভাগ-১ এ বর্তমানে কোন উন্নয়ন প্রকল্প নেই। তবে পওর বিভাগ ১ ও ২ এর আওতায় ৪টি সম্প্রসারণ প্রকল্প (এক্সটেনশন প্রজেক্ট) প্রস্তাব জমা দেয়া হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর) বিভাগের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সনাক-টিআইবি’র পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন। এসময় অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সনাক সহ-সভাপতি ভারতেশ^রী বিশ^াস, সনাক সদস্য প্রফেসর আব্দুল হামিদ, ড. দিলারা বেগম, পওর বিভাগ-১ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী এস, এম, সাইদুজ্জামান, মুহাম্মদ আবু হানিফ, টিআবি এরিয়া ম্যানেজার আবুল ফজল মো. আহাদ সহ ইয়েস সদস্যবৃন্দ।