ফিচার

সাতক্ষীরায় ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বেকার যুবকদের অর্থ হাতিয়ে নেয়া চলছেই

By Daily Satkhira

September 18, 2017

এম বেলাল হোসাইন : পত্রিকায় আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান ও ভূয়া অফিস দেখিয়ে একটি চক্র হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ওই প্রতারক চক্রের হাতে প্রতারিত হওয়া যুবক-যুবতিরা এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন। নগরঘাটা গ্রামের ইদুয়ার রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম, একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে জান্নাতুল ফেরদৌসী, মিলন ঘোষাল, হারুনের কন্যা সাবিরা পারভীন ও হাবিবুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় গত ২৬ আগস্ট’১৬ তারিখে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার অনুমোদিত পিডিএস স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জামানত বিহীন কিছু শর্ত সাপেক্ষে পুরুষ/মহিলা নিয়োগ করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে শাখা পরিচালক পদে ১ জন (বেতন ১৮ হাজার ৬০০+টাকা মাসে) অফিস সহকারী পদে ১জন (বেতন মাসে ১৪ হাজার ১০০+ টাকা), ইউনিয়ন অফিসার পদে ১জন (বেতন ১২হাজার ৩০০+ টাকা), এবং ভিজিটর পদে ১জন (বেতন প্রতিমাসে ৯হাজার+ টাকা) নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ০৫ সেপ্টেম্বর’১৬ তারিখের মধ্যে ৩৩/১১, ব্লাক-সি,তাজমহর রোড- মোহাম্মাদপুর, ঢাকা-১২০৭, এই ঠিকানায় বিধি মোতাবেক ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ফটোকপি ও নাগরিক সনদ/ জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি সহ আবেদন করতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে একটি ফোন নং ও দেওয়া হয়। নাম্বার হলো ০১৭৩৫ ৪৮২২০২।আবেদনের সময় উত্তীর্ণ হবার পর ঢাকার ওই অফিস থেকে নিজেকে পরিচালক পরিচয় দিয়ে ০১৭৩১২১৫৯৯০ নং মোবাইল ফোন থেকে প্রত্যেক আবেদনকারীর কাছে কথা বলে তাদের চাকরি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। তবে কার্যক্রম শুরু করার পূর্বে আপনাদের তালায় একটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ দিতে যেহেতু ঢাকার থেকে বিশেষজ্ঞরা যাবেন সে কারণে তাদের খরচ বাবদ ২৬৫০ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু আজও কোন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়নি। এরপর বেতন উত্তোলনে জন্য একাউন্ট খোলার নাম করে ১০৫০ টাকা। বিজ্ঞপ্তির পর ১ বছর যাবত বিভিন্ন কৌশলে প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে ১৮ হাজার ২৫০ টাকা আদায় করে ওই চক্রটি। কিন্তু তাদের কোন চাকরি হয়নি। টাকার পাঠানোর পর থেকে ওই নাম্বারগুলো বন্ধ থাকে। তবে পরিচালক রুহুল আমিনের ফোন নাম্বারটি খোলা থাকলেও রিসিভ করা হয় না। ভুক্তভোগীরা উপায় না পেয়ে ঢাকার অফিসে খোজ নিতে গিয়ে দেখেন সেখানে অফিস রয়েছে ঠিকই কিন্তু অফিসে সবসময় তালা মারা থাকে। তথ্যানুসন্ধান করে তারা জানতে পারেন ওই পরিচালক পরিচয়দানকারী রুহুল আমিনের বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে। সে অনুযায়ী তারা রুহুল আমিনের গ্রামের বাড়ি সোনাবাড়িয়ায় গেলে তার আতœীয় স্বজনরা জানান রুহুল আমিন দীর্ঘদিন বাড়িতে আসে না। তার সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই। অন্যদিকে তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার ৮টি থানা ও ৭৮টি ইউনিয়ন, যশোর জেলার ৮টি উপজেলা, বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলা খুলনার কয়রা উপজেলা থেকে ৪টি পদে কয়েক হাজার বেকার ব্যক্তি আবেদন করেন। প্রত্যেক আবেদনকারির নিকট থেকে নেওয়া হয়েছে সর্বমোট ১৮ হাজার ২৫০টাকা করে। এবিষয়ে ঢাকার অফিসে পরিচালক রুহুল আমিনের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউ ফোন রিসিভ করেননি। এঘটনায় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো নিয়োগ বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তার জানা নেই। পত্রিকায় লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি চক্র এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এব্যাপারে আইন প্রয়োগ সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।