চট্টগ্রামের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী রাজিয়া সুলতানা আরাকানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করেছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নির্যাতনের শিকার ১৯ নারীর কণ্ঠে তিনি শুনেছেন বর্বরতার কাহিনী। তারই জের ধরে তিনি হাজির হয়েছিলেন মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক গণআদালতে।
মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক গণআদালতে এক রোহিঙ্গা নারীর বর্ণনা শুনিয়েছেন রাজিয়া। তিনি জানান, ওই রোহিঙ্গা নারী তাকে বলেছেন, অসংখ্য নারীকে জোর করে গ্রাম থেকে ধরে আনা হয়। এরপর তাদের উপর চলে পৈশাচিক নির্যাতন। সেখানে কমপক্ষে ৭০ জন নারী ও যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর তাদের কাউকে কাউকে ফেরত পাওয়া গেছে। আবার অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
রাজিয়া সুলতানা আদালতকে বলেছেন, একদল সেনা সদস্য ইয়াই খাত চাউং সন গ্রাম থেকে টিনেজ মেয়েদের জোর করে ধরে নিয়ে যায়। এরপর অভিভাবকদের সামনেই ৩০ জন সেনা সদস্য ও বেসামরিক পোশাকে থাকা কিছু লোক তাদের ধর্ষণ করে। প্রতিটি মেয়েকে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ জন পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করেছে। মেয়েগুলোর মুখের ভেতর একটি ছুরি ঢুকিয়ে দেয়া হয়, যাতে তারা চিৎকার করতে না পারেন।
রাজিয়া সুলতানা তার সাক্ষ্যে বলেছেন, মেয়েগুলোকে একটি পুলিশ স্টেশনের মাঠের ভেতর হাজির করা হয়। তাদের দিকে বন্দুক তাক করে রাখা হয়। তাদের এ অবস্থায় জিজ্ঞেস করা হয় তোমাদের বাড়িঘর কে পুড়িয়েছে? তারা কি আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন)? আরএসও কি তোমাদের পিতামাতা ও ভাইবোনদের হত্যা করেছে? এ সময় ওই মেয়েগুলো জানতো তারা যদি এসব প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ বলে তাহলে তাদের হত্যা করা হবে।
ইউনিভার্সিটি মালয়া’র ল’ ফ্যাকাল্টিতে আয়োজিত পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় দিনে দেয়া সাক্ষ্যে এমন করুন কাহিনীর বর্ণনা দেন মানবাধিকার কর্মী রাজিয়া। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা, কাচিন ও অন্যান্য গ্রুপের ওপর রাষ্ট্রীয় অপরাধ সংঘটনের ওপর এই শুনানি চলছে।