তিন ফিফটিতে ব্যাটিং প্রস্তুতিটা ভালোই হল বাংলাদেশের। ইমরুল-সৌম্য ভালো শুরু করেও অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। মুমিনুল, মুশফিক থেমেছেন ফিফটি পেরিয়ে। অর্ধশতকের পর সাব্বিরকে অপরাজিত রেখে এসেছে ইনিংস ঘোষণার ডাক। পরে প্রতিপক্ষের একটি উইকেটও তুলে নেয়া গেছে। কেবল মাহমুদউল্লাহ ও লিটনের রান না পাওয়াটাই প্রথম দিনের অপূর্ণতা।
বেনোনিতে সাউথ আফ্রিকার আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭৪.১ ওভারে ৭ উইকেটে ৩০৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। পরে এক উইকেটে ২১ রানে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। ১২ রান করা ইস্সেক ডিকগলের উইকেটটি নিয়েছেন সাব্বির! রানআউটে।
তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও বাংলাদেশ ব্যাটিং করে গেছে ৪-পেরোনো রানরেট ধরে রেখে। বাউন্ডারি এসেছে ৪৩টি, অর্থাত ১৭২ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছোটার আগে অবশ্য একটি দুঃসংবাদ নিয়েই এগিয়েছে সফরকারীদের ইনিংস। চোটে তামিমের মাঠ ছাড়া।
তামিম ইকবাল এদিন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। বাংলাদেশের ইনিংস তখন সবে ৪.২ ওভারে, সংগ্রহটা ১১! মাংসপেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ৫ রান করা তামিম। দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, তেমন গুরুতর নয় তামিমের চোট। স্ক্যান করানোর পর বাকিটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তামিম দুশ্চিন্তার দিনে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার কাজটা ভালোই করছিলেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। ব্যাটে রানের আভাস মিলেছে রান খরায় ভুগতে থাকা দুজনের। আবার দুজনই ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। ৭৩ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। আগে ফেরেন ইমরুলই। লেগস্পিনার শন ভন বের্গের বলে ডিকগলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অনেকটা আক্রমণাত্মক ঢংয়ে খেলে করা ৪ চারে ৫১ বলে ৩৪ রান বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের নামের পাশে।
সৌম্য ফিরেছেন জুটিসঙ্গীর বিদায়ের তিন ওভার পরই। বাউন্সি কন্ডিশনে ভালো খেলেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে রানখরার পরও তার থেকে তাই আস্থা হারায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। নিয়ে গেছে সাউথ আফ্রিকায়। সেটার প্রতিদানের আভাসই দিচ্ছিলেন সৌম্য। কিন্তু ভালো শুরু করেও ফিফটির আগেই ফিরেছেন বাঁহাতি উদ্বোধনী। মিডিয়াম পেসার মিগায়েল প্রিটোরিয়াসের বলে উইকেটরক্ষক ক্ল্যাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়েন সৌম্য। ৮ চারে ৬৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংস তার। সেটির চেয়েও বড় ব্যাপার, ক্রিজে কাটিয়েছেন প্রায় দুই ঘণ্টা, ব্যাটিংয়ে ছিল আত্মবিশ্বাসের ছাপ। পরে মুমিনুল হকের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দুজনের জমে ওঠা জুটিটা ভাঙে ১১৯ রানে পৌঁছে। ওয়ানডে ঢংয়ে ৯ চারে ৭৩ বলে ৬৮ রানের ইনিংস সাজিয়েছেন মুমিনুল। মিডিয়াম পেসার অ্যালেক্স কোহেনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এরপরই ছোটখাট ব্যাটিং-ধস! হতাশ করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ক্যারিয়ার সচল করার সুযোগ পেয়ে প্রস্তুতিটা নিতে পারেননি। কোহেনের বলেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে। মুশফিক দ্রুতই তাকে অনুসরণ করেছেন ৬৩ রানে। ৮ চারে ৮৫ বলের ইনিংসটি থেমেছে কোহেনের বলে ক্যাচ দিয়েই। প্রোটিয়া এই মিডিয়াম পেসার পরে ফেরান রানের খাতা খুলতে না পারা লিটস দাসকেও।
সাব্বির তখনও ছিলেন। থাকলেন ইনিংস ঘোষণা করা পর্যন্ত। মেহেদী হাসান মিরাজকে (১৮) নিয়ে গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তার ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংসটা ৯ চারে ৮৯ বলে সাজানো। শেষদিকে তাসকিন আহমেদ ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
প্রোটিয়াদের একাদশের সেরা ৪ উইকেট নেয়া অ্যালেক্স কোহেনই। সেটা নিতে ১১ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচ করেছেন।
প্রথম দিনে ব্যাটিংটা ভালোই হল। দ্বিতীয় দিনে মানিয়ে নেয়ার কাজটা এখন বোলারদের।