ফিচার

বিদ্যুতের জন্য সাতক্ষীরাবাসীর হাহাকার! যথারীতি নেতারা নীর্বিকার!

By Daily Satkhira

September 24, 2017

আসাদুজ্জামান/বশির আহমেদ : দুর্বিসহ লোডশেডিং-এ অতিষ্ঠ সাতক্ষীরাবাসীর জীবন। বিদ্যুতের জন্য যখন জেলাবাসী করছে হাহাকার, তখনও জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা নির্বিকার! এসব নেতারা কমবেশি সবাই বিভিন্নভাবে সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে কেউ কিছই বলছেন না। কারও বাড়িতে আছে এসি, কারও বাড়িতে আছে দ্বৈত সংযোগ! এদিকে, আবারও বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিং ও ঘন ঘন ফিউজ কাটা, ট্রান্সমিটারের ক্রুটি ইত্যাদিতে নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা জেলাবাসী। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সময় গড়িয়ে দুপুর আসতে না আসতেই সেই তাপদাহ রীতিমত অসহনীয় হয়ে উঠছে। তীব্র তাপদাহে পথচারী থেকে শ্রমজীবী সকল মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার সাথে সাথে বিদ্যুৎ এর অব্যাহত লোড শেডিং এর কারণে সাতক্ষীরার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে, বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ সুযোগ সুবিধা নেয়ার কারণে লোডশেডিং আরো বেশী হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে, গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং হওয়ার কারণে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অব্যাহত লোডশেডিং-এর কারণে তাদের পড়াশুনায় চরম ভাবে বিঘœ ঘটছে। একইসাথে পল্লী বিদ্যুতের টানা লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়ছে জেলার ৭টি উপজেলার মানুষ। লোড শেডিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অবস্থা আরো করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান সুযোগ সুবিধা ছাড়া কোন ফাইল সহি করেন না। তিনি অবৈধ সুযোগ নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও এসি ব্যবহার করতে দেয়ার কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। আর এ জন্যই ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। একটি বিশস্ত সুত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরে বিদ্যুতের মোট ৮ টি ফিডার আছে। এর মধ্যে টাউন ফিডার, কাটিয়া ফিডার ও পুরাতন সাতক্ষীরা ফিডার মোট বিদ্যুতের সিংহ ভাগ এই ৩ ফিডারে ব্যবহার হয়। এখানে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বেশি এবং অবৈধ সংযোগ ও বেশি। প্রতি ফিডারে যে ট্রান্সফরমার আছে ক্ষমতার চেয়ে বেশি সংযোগ দেওয়ার কারণে প্রতিমাসে ১৫-২০ টা ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায় এবং সময় মত সংরক্ষণ করা হয় না। প্রতিটি ট্রান্সফরমার এর মূল্য প্রায় ৩-৪ লক্ষ টাকা। যে এলাকায় ট্রন্সফরমার নষ্ট হয় সে এলাকায় ৩-৪ দিন বিদ্যুৎ থাকে না। এখানে গ্রাহকরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। প্রতি ফিডারে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলীদর ২-৩ বছর থাকার কথা থাকলেও কি এক অজ্ঞাত কারণে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মতিয়ার রহমান টাউন ফিডার-এ ১৬ বছর ধরে দায়িত্বরত আছেন তা বোধগম্য নয়। এই দীর্ঘ সময় একই দায়িত্বে থাকার কারণে তিনি টাউন ফিডারের অধীন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পরিবারগুলোর সাথে একথরনের অনৈতিক আর্থিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তিনি এসব জায়গা থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে তাদেরকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেন। ফলে এই ফিডারে বড় ধরনের সিস্টেম লস হয় এবং সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাতক্ষীরার আবাসিক নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ রোকনুজ্জামান জানান, সাতক্ষীরায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ মেগাওয়াট। সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ১১ মেগাওয়াট। তিনি এজন্য জাতীয় গ্রিডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়ী করে তিনি বলেন, তারা আমাদের বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করছে। আর বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকার কারণে ঘন ঘন লোডশিডিং হচ্ছে।