আন্তর্জাতিক

আইনস্টাইনকে সত্য প্রমাণ করে তিন বিজ্ঞানীর নোবেল

By Daily Satkhira

October 03, 2017

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করে চলতি বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী। এ তিন বিজ্ঞানী হলেন রেইনার ওয়েইস, ব্যারি ব্যারিশ ও কিপ থ্রোন।

আজ মঙ্গলবার রয়েল সুইডিশ একাডেমি স্টকহোমে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করেন। পুরস্কার ঘোষণাকালে বলা হয়- এই তিন বিজ্ঞানীর আবিষ্কার মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা ছিল ইতিহাসে মাইলফলক।

সুইডেনের নোবেল অ্যাসেম্বলির পুরস্কার প্রদানকারী কারোলিনসকা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, চলতি বছর নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য নয় মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় নয় কোটি টাকা)। পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্যের অর্ধেক পাবেন রেইনার ওয়েইস। ব্যারি ব্যারিশ ও কিপ থ্রোন ভাগাভাগি করে নেবেন বাকি অর্ধেকটা।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মেগা প্রকল্প’ মহাকর্ষীয় ত্বরণ শনাক্তকরণ গবেষণাগার (লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্রাভিটেশনাল অবজারভেটরি) বা ‘লিগো প্রজেক্টে’র সাফল্যের স্বীকৃতি পেলেন এই তিন বিজ্ঞানী।

বিশ্বের পদার্থ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জোট ১৯৯৭ সাল থেকে এই প্রকল্প নিয়ে গবেষণা করছে। আর এই গবেষণায় ব্যবহার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত লিগোর মহাকর্ষীয় ত্বরণ শনাক্তকরণ গবেষণাগার।

তাদের গবেষণা ‘লিগো পরীক্ষা’ বিভিন্ন মহাকর্ষীয় তরঙ্গের কাঠামো ও গঠন শনাক্তে সক্ষম। এই তরঙ্গ আবিষ্কারে মহাবিশ্বের সৃষ্টি, ধারাবাহিক পরিবর্তন ও কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

এদিকে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, এই তিন বিজ্ঞানীর গবেষণার বিষয়বস্তু মহাকর্ষীয় তরঙ্গের আপেক্ষিক ধারণা আইনস্টাইন শতবর্ষ আগেই দিয়েছিলেন।

১৯১৬ সালে আইনস্টাইন প্রথম আপেক্ষিক তত্ত্বের ঘোষণায় মহাকর্ষীয় তরঙ্গের ধারণা দেন। আপেক্ষিক তত্ত্বে বলা হয়, মহাবিশ্বের সৃষ্টি ‘বিগ ব্যাং’-এর সময়ে যে ঢেউ তৈরি হয়েছিল তা-ই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ।

কিন্তু ওই তরঙ্গের অস্তিত্ব প্রমাণ করে যেতে পারেননি আইনস্টাইন। ‘লিগো প্রজেক্টের’ আবিষ্কারের মাধ্যমে তাঁর ওই তত্ত্বটি প্রমাণিত হয়।

নোবেল পাওয়া তিন বিজ্ঞানীই ‘লিগো প্রজেক্টে’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই লিগো প্রজেক্ট থেকেই ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করেন ‘লিগো প্রজেক্টের’ সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

২০১৬ সালে প্রথম মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা গেছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন জানানো হয়, এই তরঙ্গের ওপর ভর করেই চলছে মহাবিশ্ব। পৃথিবীর ঘূর্ণন, গ্রহ-নক্ষত্রের গতি সব কিছুই ঘটছে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের কারণে। বিজ্ঞানীরা তখন জানিয়েছিলেন, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করার মাধ্যমে আইনস্টাইনের তত্ত্ব নির্ভুল প্রমাণিত হলো।

গত বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল জিতেছিলেন তিন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেভিড জে থউলেস, এফ ডানকান এম হ্যালডেন ও জে মাইকেল কস্টারলিৎজ। পদার্থের বিশেষ ঘনীভূত অবস্থা নিয়ে গবেষণা করে নোবেল পেয়েছিলেন তাঁরা।