ফিচার

সাতক্ষীরায় ফি দিতে না পারায় পরীক্ষার হল থেকে ছাত্রীকে বের করে দিলেন মাদ্রাসার সুপার!

By Daily Satkhira

October 05, 2017

নিজস্ব প্রতিনিধি : পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় পরীক্ষার হল থেকে ৮ম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে বের করে দেওয়া হয়ছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং সুপার নজরুল ইসলাম, সহ- সুপার মাওলানা আনোয়ার ইলাহী ও কম্পিউটার অপারেটর আব্দুর রহমানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদরের সাতানী কুশখালী দাখিল মাদ্রাসায়। ৮ম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, মঙ্গলবার হতে আমাদের টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমরা সকাল ১০ টার সময় পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে শুরু করি। প্রায় ৩০ মিনিট পর যারা পরীক্ষার ফির টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করেনি তাদেরকে বের করে নিয়ে যায় শিক্ষকেরা। পরে সবাই পরীক্ষার হলে এলেও শরিফা আর পরীক্ষা দিতে আসেনি। শরিফা নামের ৮ম শ্রেণির ওই ছাত্রী বলেন, আমার বাবা একজন গরীব মানুষ। পরিক্ষার ফি দিতে না পারায় সুপার, সহ- সুপার ও কম্পিউটার স্যার আমাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে আনে। আমাকে পরীক্ষা দিতে দেন নি। শরিফার বাবা মোতাহার হোসেন বলেন, আমার ৩ সন্তান এই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। আমি গরিব মানুষ। অনক কষ্টে ৩৬০ টাকা যোগাড় করে মাদ্রাসায় পরিক্ষার ফি দিয়েছি কিন্তু সুপার বলেন, এ টাকা দিলে হবে না। সম্পূর্ণ ৬৮০ টাকায় দিতে হবে। তাই আমি চেয়ারম্যানের কাছে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ঘণ্টা খানেক পর আমার মেয়ে বাড়ি যেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে যে, টাকা পরিশাধ না করায় তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়েছে। পরে আমি আবার আমি মাদ্রাসায় আসলে সুপার বলে, “৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় যদি চেয়ারম্যান-মেম্বরকে জানাও তবে এস এস সি পরীক্ষার সময়তো মন্ত্রীকে জানাবে।” কুশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল বলেন, সকাল ৯টায় মেয়টির বাবা মোতাহার হোসেন আমার কাছে ফোন করে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার সামর্থ নেই বলে জানাই। তখন আমি মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা অসিকুর রহমানকে ফোন করে বলেছিলাম যে ৩৬০ টাকা নিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক, পরে যা করতে হয় আমি করবো। কিন্তু মাওলানা অসিকুর রহমান সুপারকে বলা সত্ত্বেও মেয়টিকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। মাওলানা অসিকুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দেওয়ার সাথে সাথে আমি সুপারকে বলেছিলাম। কিন্তু পরে শুনি পরীক্ষা না দিয়ে মেয়েটি বাড়ি চলে গেছে। সাতানী কুশখালী দাখিল মাদ্রাসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য মেম্বর লেয়াকাত আলী বাবু বলেন, মেয়েটির গার্ডিয়ান আমার সাথে নালিশ করার সাথে সাথে আমি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ও চেয়ারম্যান সুপারিশ করার পরও তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক। সাতানী কুশখালী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা নজরুল ইসলাম বলন, “এ ব্যাপারে আমি কথা বলতে ইচ্ছুক না। যা হয়েছিল তা মিটে গেছে।” সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমাক কেউ জানায় নি। এমনকি কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয় নি। তবে বৃহস্পতিবার সুপারের সাথে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেবো।”