আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সরকার যে সেদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের কাছে কাউকে যেতে দিচ্ছে না, জাতিসংঘ সেটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছে । জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ দফতরের প্রধান মার্ক লোকক বলেন, সহিংসতার পরও মিয়ানমারের রাখাইনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখনো রয়ে গেছে। জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে মি লোকক জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে আবারও বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামবে বলে আশংকা করছেন তারা। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ইতোমধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। গত অগাস্ট মাস থেকে রাখাইনে এই সহিংসতা শুরু হয়। গত ছ’সপ্তাহে এটি এক বড় রকমের মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। লোকক বলেন, জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মিয়ানমারে যেতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। তবে ওই কর্মকর্তাকে রাখাইনে নিয়ে যাওয়া হলেও তাকে কতোটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে সেটা পরিস্কার নয়। এর আগে জাতিসংঘের তরফে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অভিযানকে জাতিগত নিধন অভিযানের সাথে তুলনা করা হয়। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সন্ত্রাসীদের দমন করার চেষ্টা করছে। বর্মী নিরাপত্তা বাহিনীর উপর জঙ্গিদের হামলার পরই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই কঠোর অভিযান শুরু হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, রোহিঙ্গাদের চারশোরও বেশি গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ দফতরের প্রধান মার্ক লোকক তার কর্মকর্তাদেরকে রাখাইনে যেতে দেওয়ার জন্যে মিয়ানমারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আসা এখনও বন্ধ হয়নি। এখনও হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ভেতরে অবস্থান করছে। আর সেকারণে শরণার্থীদের ঢল যদি আবারও নামে, তার জন্যে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মিয়ানমারের সরকারি বার্তা সংস্থাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলছে, আরো বহু সংখ্যক রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার জন্যে প্রস্তুত। এজন্যে তারা রোহিঙ্গাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার ভীতির পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য ও খাদ্য সঙ্কটের কথা উল্লেখ করেছে।