বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলি হিসাব দিয়েছেন, মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনের ১৭ লাখের মত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নয় লাখই এখন বাংলাদেশে। মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজে এক বক্তৃতায় বলেন, “ইতিহাসে ই প্রথম বারের মত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মূল অংশ বাংলাদেশে চলে এসেছে।” আলি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে আরো কিছু দেশে চার লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। ফলে, তার মতে, বড়জোর চার থেকে পাঁচ লাখ লোক রোহিঙ্গা এখন মিয়ানমারের উত্তর রাইনে অবশিষ্ট রয়ে গেছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারে সরকারের “জাতিগত ভারসাম্য আনার পরিকল্পনার” অংশ হিসাবে বুথিডং এবং মঙডুকে রোহিঙ্গা শূন্য করে ফেলার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন গত ২৫শে অগাস্ট থেকে তিন হাজারের মত রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে। “রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে জাতীয় প্রচার মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা লক্ষণীয়। রাখাইনে ইসলামি সন্ত্রাসবাদ এবং বাঙালি সন্ত্রাসবাদ চলছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিবেশী কয়েকটি রাষ্ট্রকেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।” বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন মঙ্গলবারএই হিসাব দিচ্ছিলেন, সেদিনই জাতিসংঘ বলছে, হঠাৎ নতুন করে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, সোমবার নতুন করে ১১,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করলেও, সে ব্যাপারে অগ্রগতির কোনো আশাবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর কণ্ঠে শোনা যায়নি। তিনি বরঞ্চ মন্তব্য করেন, সম্প্রতি কিছু রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার যে কথা মিয়ানমার বলছে সেটি “আন্তর্জাতিক চাপ প্রশমনে মিয়ানমারের একটি কৌশল হতে পারে।” তিনি বলেন, যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি করে সেই অজুহাতে মিয়ানমার কোফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন বিলম্বিত করার চেষ্টা করতে পারে। বিভিন্ন পর্যায়ে মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে, মন্ত্রী খোলাখুলি হতাশা প্রকাশ করেন। “কোনো কিছুই তো অগ্রসর হয়না…।” তারপরও বাংলাদেশের প্রতি মিয়ানমারের “উদাসীনতা” স্বত্বেও মত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নাই। সূত্র: বিবিসি বাংলা।