ভারতেল মালদার কালিয়াচক থানার মোজমপুর এলাকার বাসিন্দা সেন্টু শেখের দুই স্ত্রী। শুক্রবার দু’জনের মধ্যে পিঠে খাওয়া নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা। ক্রমে ঝামেলা তীব্র আকার ধারণ করে। শেষ পর্যন্ত ঝগড়া গড়াল হিংসাত্মক পরিণতির দিকে।
দুই সতীন একে অপরের কান কাটলেন। একজনের কান কাটা গেল কামড়ের ফলে। অন্য জনের হাঁসুয়ার কোপে। দু’জনকেই নিয়ে আসা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা দু’জনেরই কান জোড়া লাগিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু শল্যচিকিৎসাটি সফল হল কি না, তা জানতে এখনও অপেক্ষা করতে হবে। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এবেলা।
জানা গিয়েছে, সেন্টু সেখ পেশায় শ্রমিক। পাশাপাশি ভুটভুটি চালিয়ে দিনযাপন করেন। ২৪ বছর আগে কালিয়াচকের বালুপুরের বাসিন্দা চাঁদমণি বিবির সঙ্গে বিয়ে হয় সেন্টুর। তাদের নয়টি সন্তানও আছে। ৮ বছর আগে সেন্টু আবার বিয়ে করেন।
মহদীপুরের বাসিন্দা কুলশুনা বিবির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কুলশুনার অবশ্য আগেও বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর সঙ্গে মহদীপুরে বসবাস করতেন তিনি। সেখানে তাঁর পাঁচটি সন্তানও আছে। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের পরে মোজমপুরের সেন্টু শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর।
সেন্টু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গেই বাস করতেন। দুই সতীনের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকত। গতকাল রাতে প্রথম স্ত্রী চাঁদমণির আত্মীয়রা বাড়িতে এলে, তাঁদের জন্য পিঠে বানান চাঁদমণি। অভিযোগ, কিছু পিঠে বেঁচে যায়। সেগুলো চাঁদমণি তাঁর স্বামী ও কুলশুনা বিবিকে না দিয়ে ফেলে দেন। ক্ষুব্ধ সেন্টু শেখ ও কুলশুনার সঙ্গে প্রথম স্ত্রী চাঁদমণির বচসা বাধে।
শেষ পর্যন্ত ঘটনা গড়ায় মারামারির দিকে। সেন্টু ও কুলশুনা দু’জনে মিলে চাঁদমণিকে মারধর করতে থাকেন। মারামারির মধ্যেই কুলশুনা চাঁদমণির কানে কামড়ে দেন। তাঁর কান দ্বিখণ্ডিত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে চাঁদমণির ছেলে হাঁসুয়া দিয়ে কুলশুনার কানে আঘাত করেন। কুলশুনারও একটি কান খসে পড়ে যায় মাটিতে।
অসহায় সেন্টু দুই স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সঙ্গে কানের কাটা অংশও নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা কান দু’টিকে জোড়া লাগালেও এখনও বিপদ কেটেছে বলা যাচ্ছে না। সময় না গেলে অপারেশন সফল হল কি না তা জানা যাবে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সেন্টু শেখের দুই স্ত্রী’র কান কাটা নিয়ে সরগরম মালদার মোজমপুর। দুই সতীনের লড়াইয়ের করুণ পরিণতির কাহিনি ফিরছে এলাকার বাসিন্দাদের মুখে মুখে।