ফিচার

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের কোটি টাকা টেন্ডারবাজির তদন্ত সম্পন্ন

By daily satkhira

October 17, 2017

আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের কোটি টাকার এম.এস. আর সামগ্রীর দরপত্র আহবানে অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর অবশেষে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ তদন্ত টিমটি সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগকারী বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছ থেকে সে দিনের অনিয়মের নানা তথ্য লিখিতভাবে জমা নিয়েছেন।

এর আগে গত ৬ আগষ্ট সরকার দলীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তাঁতী লীগ ক্যাডারদের তান্ডবের মুখে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে দরপত্র জমা দিতে পারেন নি বেশিরভাগই ঠিকাদাররা। ক্যাডাররা তাদের সিডিউল কেড়ে নিয়ে নষ্ট করে দেয়। সিডিউল জমা দিতে না পেরে সে সময় মেসার্স শহিন এন্টার প্রাইজ, এস আর এন্টার প্রাইজ, মেসার্স শাহজান চৌধুরী, কোহিনুর মেডিকেল নামের চারটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য মহা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে সেখান থেকে বিভাগীয় /ডিডি /স্বাস্থ্য/ অধিঃ/ হিসাব/ এমএসআর/ সিএস/ সাতক্ষীরা/ ০১/২০১৭/২০১৮/৪৮/৬৪ তারিখ-২৬.০৯.১৭ স্মারকে স্বাস্থ্য বিভাগের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ রওশন আনোয়ারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এই কমিটির সদস্যরা সিভিল সার্জন অফিসে অভিযোগকারী বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নানা তথ্য লিখিতভাবে তাদের কাছ থেকে জমা নিয়েছেন। জানা গেছে, গত ৬ আগষ্ট সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগে ওষুধ, গজ ব্যান্ডেজ, কেমিক্যাল রিএজেন্ট, আসবাবপত্রসহ সাতটি আইটেম সরবরাহের বিপরীতে এক কোটি পনের লাখ টাকার টেন্ডার আহবান করেন সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান। এ জন্য ৯৭ টি সিডিউল বিক্রি হয়। এর মধ্যে জমা পড়েছে মাত্র ৬ টি টেন্ডার। । উপস্থিত ভুক্তভোগী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জানান, এমএসআর নীতিমালা অনুযায়ী ত্রিশ লক্ষ টাকার উপরে দরপত্রের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী তিনটি স্থানে এই দরপত্র জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও এক্ষেত্রে রহস্যজনকভাবে কেবলমাত্র সিভিল সার্জন অফিসের বাক্সে তা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স দ্বারা দরপত্র আহবান, নিয়মবহিভর্ুৃতভাবে ১ কোটি টাকার প্রত্যয়ন পত্রের কার্যাদেশ চাওয়াসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতি করা হয়েছে। যা গত তিন বছরে এ ধরনের অনিয়ম করা হয়নি। তারা জানান, সিভিল সার্জন ডাঃ তাওহিদুর রহমান একটি বিশেষ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে তিনি এ অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। তারা আরো জানান, এই সিভিল সার্জন সাতক্ষীরায় যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত যে কয়টি টেন্ডার আহবান করেছেন প্রত্যেকটিতে তিনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। ভুক্তভোগী ঠিকাদারসহ সাতক্ষীরা সচেতন মহল স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের কাছে দূর্নীতিবাজ এই সিভিল সার্জনের বদলিসহ শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান জানান, আমি সরকারী নিয়ম অনুযায়ীই টেন্ডার আহবান করেছিলাম। কোন অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নেয়নি। তিনি আরো জানান, তদন্ত টিম যথাযথভাবে তদন্ত করে চলে গেছেন। তারা আমাদের সামনে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি। এ বিষয়ে জানার জন্য তদন্ত টিমের প্রধান খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ রওশন আনোয়ারকে তার ব্যবহৃত ০১৭১৫-০২৩৯০৫ নাম্বারের মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেননি।