একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহনের প্রত্যাশা করছে ইসি ও বিভিন্ন ছোট বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এক শ্রেণীর নেতাকর্মীরা দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে। দলের সু-নাম ক্ষুন্ন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত অনেকে। উপজেলা পর্যায়ের কাবিখা থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের বাধঁ নির্মাণসহ বিভিন্ন সরকারী বরাদ্ধ থেকে দুর্নীতি করছে অনেক নেতাকর্মী।
বন্যায় হাওরের পানিতে সুনামগঞ্জের হাজার কোটি টাকা ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। সেই বাধঁ নির্মাণের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছিলেন। সুনামগঞ্জে হাওরে ফসলহানি ও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি করেছে এক জেলা যুবলীগ নেতা। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতিবাজদের দল থেকে মনোনয়ন না দেয়ার কথা বলেছেন। সেই কারণে মনোনয়ন না চাওয়া প্রার্থীরা বেশি করে দুর্নীতি করছে বলে জানান রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া রয়েছে এমপি ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ। এছাড়ও এমপি-মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে অনেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। অনেকে সরকারি চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিচ্ছেন। এ বছরের শুরুতেই রাজবাড়ির এক এমপির স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তিনি চাকরি দেয়ার কথা বলে দলের বিভিন্ন লোকজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো, নজের মওলা নাজু নামের এক যুবলীগ নেতা তার চাচাতো ভাইয়ের চাকরির জন্য এমপির স্ত্রীকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই যুবকের চাকুরি হয়নি।
এ বিষয়ে রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনি বলেন, যে কোনো দল ক্ষমতা থাকলে একটা সুবিধা শ্রেণী সব জায়গাতে সৃষ্টি হয়। এটা যে আওয়মী লীগের ক্ষেত্রে তা নয়। বিএনপি যদি ক্ষমতা থাকতো তাদের ক্ষেত্রেও একই হতো। দুর্নীতিবাজদের হাতে যদি সমস্ত ক্ষমতা হয় তাহলে দলের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। আমি দলের লোক হিসেবে বলতে পারবো না, বাহিরের লোক নির্ণয় করবে। দুর্নীতিবাজরা যদি দলের মূল কেন্দ্রে থাকে তাহলে দলের জন্য দু:সংবাদ। দলের বেশি ভাগ এমপি মন্ত্রী যদি দুর্নীতি মুক্ত থাকেন তাহলে দুর্নীতিবাজ দলের জন্য সমস্যা হবে না।
আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার বলেন, দুর্নীতি এখন একটা ক্যান্সারের পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি যারা করবে তারা নিজ দায়িত্বে করছে। দুর্নীতিবাজদের আওয়ামী লীগ কোনো দিন সাপোর্ট দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও সাপোর্ট দিবে না।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ বিশাল বড় দল। এখানে ভালো মানুষ থাকতে পারে আবার কিছু খারাপ মানুষ থাকতে পারে। তদন্ত সাপেক্ষে আইন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।