মোস্তাফিজুর রহমান : নি¤œ চাপের প্রভাবে কয়েক দিনের অবিরম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আশাশুনি উপজেলার জনজীবন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় আমন ফসলের ব্যপক ক্ষতির আশংক্ষা করছে চাষীরা। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত অবিরাম বর্ষণে উপজেলার সাধারন মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। নিন্মাঞ্চলের আমন ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতির আশংক্ষা করা হচ্ছে। উপজেলার অধিকাংশ মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। বেশ কিছু কৃষকের পাকা ধানও পানির নিচে তলিয়ে যেতে দেখাগেছে। বিভিন্ন এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের বসত বাড়ির আঙিনায় জমেছে হাঁটু পানি। কিছু কিছু এলাকায় বিষাক্ত পোকা মাকড়ের উপদ্রবও বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘর থেকে বের হতে না পেরে দিন আনা দিন খাওয়া দিনমুজর পড়েছে চরম বিপাকে। অবিরাম বৃষ্টি ও হালকা ঝড়ো হাওয়ায় স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে। আমন চাষিরা ফসল নিয়ে রয়েছে দারুণ উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের বক্তব্য পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা ভালো থাকলে এমন বৃষ্টিতে হয়তো ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অনেক কম হত। বড়দল থেকে বি এম আলাউদ্দীন জানান, প্রভাবশালী মহল কতৃক নেট পাটা বসিয়ে পানি নিষ্কাষন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত করায় কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বড়দল, খাজরা ও আনুলিয়া ইউনিয়নে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বহু মহস্য ঘের তলিয়ে মৎস্য চাষীরা মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের প্রতাপনগর প্রতিনিধি জানান, অবিরাম বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে প্রতাপনগরের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের হিজলীয় ও কোলা পূর্বের বেড়িবাঁধ ভাঙন কবলিত স্থানের সন্নিকটের বেঁড়িবাধ আবারও হুমকির মুখে। এভাবে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া চলতে থাকলে যে কোন মূুহুর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তর এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আরও জানান, শ্রীউলা ইউনিয়নের বালিয়াখালী ও কলিমা খালীর বহু মৎস্য ঘের ইতমধ্যেই পানিতে একাকার হয়ে গেছে। দরগাহপুর প্রতিনিধি জানান, বৃষ্টিতে দরগাহপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর. খাঁশবাগান, সোনাই ও রামনগরের প্রায় ১হাজার বিঘা মৎস্য ঘের পানির নিচে তলিয়ে মৎস্য চাষীদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দরগাহপুর এস কে আর এইস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে। পাশ্ববর্তী কাদাকাটি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মৎস্য ঘের ও ফসলের ব্যপক ক্ষতির আসংখ্যা করা হচ্ছে। বুধহাটা প্রতিনিধি জানান, ইউনিয়নের চাপড়া, সূর্যখালী ও নৈকাটিসহ কয়েকটি এলাকার বৃষ্টি ও বাতাসে পানির ঢেউয়ে ঘের রক্ষা বেঁড়ীবাধ গুলি ভেঙে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এতে মৎস্য চাষীরা ব্যপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া ইউনিয়নের নিন্মঞ্চালের অধিকাংশ ফসলী জমি পানির নেিচ নিন্মজিত হয়ে গেছে। এছাড়া আশাশুনি সদর, কুল্যা ও শোভনালী ইউনিয়নে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মৎস্য ঘের ও ফসলের ক্ষয় ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ আ ব ম মোছাদ্দেক জানান, অবিরাম বৃষ্টিতে ইউনিয়নের কমবেশি সমস্যার কথা আমার কানে এসে পৌচেছে। পানি নিষ্কাষনের ব্যাপারে আমার সজাগ দৃষ্টি আছে। কারো দ্বারা কোথাও পানি নিষ্কাষনে বাধাগ্রস্থ হলে আমি নিজেই সেখানে চলে যাব। উপজেলা কৃষি অফিসার শামিউর রহমান জানান, নি¤œ চাপের প্রভাবে কয়েক দিনের অবিরম বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের কম বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে যে টুকু বৃষ্টি হয়েছে এ মুহুর্তে আর যদি না হয় তবে ক্ষতির পরিমান কম হবে।