একটা জয় বদলে দিতে পারে সবকিছু। এমন সান্ত্বনাবাক্য মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতেও সেই হতাশার হার, এবার ২০০ রানে। সঙ্গে প্রায় এক বছর বাদে আরেকটি অস্বস্তির হোয়াইটওয়াশ।
বাংলাদেশ সর্বশেষ হোয়াইটওয়াশ হয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। ওয়ানডেতে তিন কিংবা তার বেশি ম্যাচের সিরিজে এই নিয়ে বাংলাদেশ ২০ বারের বেশি হোয়াইটওয়াশ হলো!
২০০ কিংবা তার বেশি রানে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ পরাজয়। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বড় হার পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২৩৩ রানে। এর আগে এই সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০৬ রানে হারার নজির আছে। ভারতের বিপক্ষে একবার ২০০ রানেও হারার ইতিহাস আছে। এবার সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে আরেকটি ২০০ রানের হার।
যে উইকেটে সাউথ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা ধেই ধেই করে রান তুলেছে, সেখানে লিটন, ইমরুলদের ‘থর হরি কম্প’ অবস্থা ছিল। ৩৭০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৫ ওভারের ভেতর ৬২ রান তুলতে পাঁচ উইকেট ছিল না! সেখান থেকে ৪০.৪ ওভারে ১৬৯ রানে অলআউট। মান যাওয়ার দিনে চূড়ান্ত অপমানের হাত থেকে রক্ষা হয় সাকিব আল হাসানের ৬২ রানের ইনিংসে।
জবাব দিতে নেমে দলীয় তিন রানের মাথায় ইমরুলকে (১) হারায় বাংলাদেশ। ১৫ রানের মাথায় বিদায় নেন লিটন দাস (৬)। আর পাঁচ রান যোগ করতে বিদায় নেন সৌম্য সরকার (৮) । দলের রান অর্ধশতক পার হতেই চলে যান মুশফিক (৮)। আর ১০ রান যোগ করে পথ ধরেন রিয়াদ (২)।
এরপর সাব্বির রহমানকে (৩৯) নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। এই জুটি ভাঙতেই সেই ‘তাসের ঘর’।
গোটা সফরের মতো এই ম্যাচেও ধারহীন বল করেছে বাংলাদেশ। স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া কেউ এতটুকু জ্বলতে পারেননি। মিরাজ ১০ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন।
মিরাজ সাফল্য পান ১৮তম ওভারে। অর্ধশতক থেকে দুই রান দূরে থাকা বাভুমাকে ফেরান। এরপর ২২তম ওভারে ফেরান কুইন্টন ডি কককে (৭৩)।
সাউথ আফ্রিকা এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওপেন করতে নামেন টেম্বা বাভুমা এবং কুইন্টন ডি কক। দুজন ফিরে গেলে অধিনায়ক ডু প্লেসিস দলকে পথে রাখেন। আহত হয়ে ফেরার আগে ৬৭ বলে ৯১ রান করে যান। সঙ্গে এইডেন মার্করাম করেন ৬৬। তিনি ফেরেন রানআউট হয়ে।
শেষ দিকে ডি ভিলিয়ার্স ১৫ বলে ২০ রান করে যান। রুবেলের বলে বড় শট খেলতে যেয়ে মাশরাফীর হাতে ধরা পড়েন।
অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফীর এটি ৫০তম ম্যাচ ছিল। যার মধ্যে জয় পেয়েছেন ২৭টিতে। ১৮টি দেশের মাটিতে। বাকি ৯টি বিদেশে। বিপরীতে ২১ হারের মাত্র পাঁচটি দেশের মাটিতে, ১৫টি বিদেশে। ম্যাশের নেতৃত্ব দেওয়া দুটি ম্যাচে কোনও ফল হয়নি। জয়ের শতকরা হার ৫৫.১।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: সাউথ আফ্রিকা ইনিংস: ৩৬৯/৬ (৫০ ওভার) (বাভুমা ৪৮, ডি কক ৭৩, ডু প্লেসিস ৯১, মার্করাম ৬৬, ভিলিয়ার্স ২০, বেহারদিন ৩৩*, মুল্ডার ২, কেলুকোও ৫, রাবাদা ২৩*; মাশরাফী ০/৬৯, মিরাজ ২/৫৯, রুবেল ১/৭৫, সাকিব ০/৫৬, তাসকিন ২/৬৬, মাহমুদউল্লাহ ০/৩৩, সাব্বির ০/৮)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৬৯ (৪০.৪ ওভার)
(ইমরুল ১, সৌম্য ৮, লিটন ৬, মুশফিকুর ৮, সাকিব ৬৩, মাহমুদউল্লাহ ২, সাব্বির ৩৯, মিরাজ ১৫, মাশরাফী ১৭, তাসকিন ২, রুবেল ০*; রাবাদা ১/৩৩, প্যাটারসন ৩/৪৪, মুল্ডার ১/৩২, ফেলুকোও ১/১৩, ইমরান তাহির ২/২৭, মার্করাম ২/১৮)।
ফল: ২০০ রানে জয়ী সাউথ আফ্রিকা।
ম্যাচ সেরা: ফ্যাফ ডু প্লেসিস
সিরিজ সেরা: কুইন্টন ডি কক।