কলারোয়া প্রতিনিধি: কলারোয়া উপজেলার ১ নং জয়নগর ইউনিয়নে ঘুষের বিনিময়ে কার্ড পেয়েছে এলাকার স্বচ্ছল ব্যক্তিরা। ঘুষ দিতে না পারায় হতদরিদ্র অনেক পরিবার কার্ড পায়নি। এমনকি হতদরিদ্রদের কার্ড না দিয়ে ইউপি মেম্বররা নিজেদের পরিবারের সদস্যদের নামে কার্ড গ্রহন করে ১০ টাকা মূল্যের চাল তুলে নিয়েছেন। এসব অনিয়ম রোধসহ দায়ী জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন বঞ্চিত এসব হত দরিদ্র মানুষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রিজাউল বিশ্বাস সবগুলো কার্ডই স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মীদের নাম তালিকাভুক্ত করে। তাঁর স্বচ্ছল প্রতিবেশীসহ নিজের মায়ের নামেও নামে কার্ড ইস্যু করেন। আর যারা টাকা দিতে পারেননি তাঁদের কার্ড দেওয়া হয়নি। ইউনিয়নের উত্তর ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের হত দরিদ্র জাহানারা বেগম, রেকসোনা খাতুন, সমার্তবান বেগম, রওশনারা খাতুন,রুমা খাতুন, নাজমা বেগম, সোনাভান বিবি, সুফিয়া খাতুন, নাসিমা বেগম, হামিদা খাতুন, আবদুল মজিদ, ফতেমা খাতুন জানান, তাঁদের প্রতিটি কার্ডের জন্য ওয়ার্ড সদস্য রিজাউলকে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। তার পরও তাদেরকে কার্ড দেয়া হয়নি। এখন টাকা ফেরত চাইলে ভবিষ্যতে আর কোন সরকারি সাহায্য দেয়া হবে না বলেও হুমকি দিচ্ছে। তারা তাদের টাকা ফেরত না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, সংররক্ষিত মহিলা মেম্বর কোহিনুর বেগমও এলাকা দুস্থ ও অসহায়দের নিকট থেকে টাকা ১০ টাকায় চাল দেয়ার কথা বলে টাকা আদায় করেছেন। দক্ষিন ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের পঙ্গু আনন্দ টাকা দিতে না পারায় তাকে চালের কার্ড না দিয়ে মহিলা মেম্বর তার স্বামী মফেজ শেখের নামে কার্ড দিয়ে চাল উত্তোলন করেছন। প্রথম কোটার চাল বিতরনের দিনে মহিলা মেম্বরের স্বামী এলাকার ১৬ জন হত দরিদ্রদের চাল তুলে নিয়ে নিজের মাছের খাদ্য তৈরী করে ঘেরে ছিটিয়ে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলাকাবাসিদের অভিযোগ দেয়ার কথা শুনে ইউপি সদস্য রেজাউল বিশ্বাস গাঁঢাকা দিয়েছেন। তাকে ইউনিয়ন পরিষদে, বাড়িতে এমনকি তার মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না। ইউপি চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আল মাসুদ বাবু বলেন, কার্ডের বিনিময়ে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় সদস্য রেজাউল বিশ্বাস ও মহিলা মেম্বার কোহিনুরের স্বামী মফেজ শেখ সম্প্রতি তার উপর হামলা করে। এ ঘটনায় তিনি (চেয়ারম্যান) কলারোয়া থানায় একটি জিডি করেছেন। ইউপি সচিব আসাদুল ফারুক জানান, চালের কার্ড প্রদানের কথা বলে রেজাউল মেম্বর গরীবদের নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল প্রদানের জন্য ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে ৭৫৮ টি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রেজউল বিশ্বাস পেয়েছেন ৬১ টি কার্ড। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বলেন, এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য আজ শনিবার উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও খাদ্য কর্মকতাকে জয়নগর ইউনিয়নে পাঠানো হবে।