ডেস্ক রিপোর্ট : আশাশুনি উপজেলার এক জায়গায় বন্ধ হলে আরেক জায়গায় ঠিকই শুরু হয়ে যায় নগ্ন নৃত্য ও প্রকাশ্য জুয়ার আসর। আর অপসংস্কৃতির আসর বসাতে নেপথ্যে মদদ দেয় পুলিশ! আর পুলিশের সাথে পরিচালকদের যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করে একজন পতিত সাংবাদিক! পেশাদার সাংবাদিক না হলেও পেশাদার দালাল এই সাংবাদিকের সাথে পুলিশের সখ্যতা সবাই জানে। সাতক্ষীরার সাধারণ দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং গ্রামীণ এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার মূল হোতাদের দোসর এই চক্রটি সম্প্রতি কাদাকাটি ও শ্রীউলা ইউনিয়নে পরপর দুটি জুয়া ও নগ্ন নৃত্যের আসর বসায়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এগুলো বন্ধের নির্দেশ দেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীন।
কিন্তু একের পর এক এধরনের নগ্নতা ও জুয়ার আসর বসাচ্ছে একই চক্র। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তারা চুপ থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের পিরুজপুর নতুন চর আর্দশ গ্রামের মাঠে চলছে চরম অশ্লীল নগ্ন নৃত্য ও প্রকাশ্য রমরমা জুয়ার আসর। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক বশির আহমেদ সরেজমিন গিয়ে দেখতে পেয়েছেন অর্ধনগ্ন বিকৃত নৃত্য ও প্রকাশ্য জুয়ার বোর্ড বসেছে সেখানে। আর্দশ গ্রামের মাঠ দখল করে চলছে এসব অপকর্ম। আর দেখেও না দেখার ভান করছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই। গত তিন দিন ধরে চলছে এসব রমরমা অবৈধ বেলেল্লাপনা। আশাশুনি উপজেলায় অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাদের দায়িত্ব এগুলোর আয়োজনকারীদের আইনের আওতায় আনা তাদের অনেককেই গভীর রাতে এসব নগ্নতা উপভোগ করতেও দেখা যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের পিরুজপুর আর্দশ গ্রামের মাঠে যাত্রা শো এর নাম করে ১০০ থেকে ৫০০টাকা টিকিটের বিনিময়ে দর্শকদেরকে ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে স্টেজে চলছে কয়েকজন স্থুলকায় তরুণীর অশ্লীল পোশাকে নগ্ন নৃত্য। এভাবে প্রতিদিন চলছে সারা রাতব্যাপী একটি শো। আর স্টেজের পাশেই সাজানো হয়েছে রমরমা জুয়ার আসর। নগ্ন নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে পাতানো জুয়ার আসরের ফাঁদে পকেট কেটে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এদিকে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শুধু উৎসবের আড়ালে নয় উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে প্রতিদিনই গোপনে বসছে জুয়ার আসর। এসকল আসরে সবকিছু হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ আর লাভবান হচ্ছে বোর্ড মালিক ও আয়োজকরা। স্টেজে চলছে নগ্ন নৃত্য আর স্টেজের পিছনে দেহব্যবসার মত জঘন্য কারবার চলছে এমনটি অবশ্য দাবি মেলা মাঠের অনেকেরই। এদিকে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, জুয়া ও নগ্ন নৃত্যের জমজমাট আসর পরিচালনা করছেন উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের শহিদুল ইসলাম ও আশাশুনি সদরের রজব আলী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায় সব দিক ম্যানেজ করেই চলছে এসকল অবৈধ কারবার। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের জীবনে যে অস্থিরতা নেমে এসেছে সেখানে পরিবারের খাদ্য যোগাতে উপার্জনের অর্থ শেষ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মানুষের সামান্য রোজগারের অর্থও চলে যাচ্ছে জুয়া ও অশ্লীলতায়। বেড়ে যাচ্ছে পারিবারিক অশান্তি। অসহায় সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়েই জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ নানাবিধ অপকর্মের সাথে। অবনতি হচ্ছে উপজেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। এই দুষ্ট চক্র যেন এভবে কথিত প্যন্ডেলের নামে নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর সাজিয়ে দরিদ্র মানুসের কষ্টে অর্জিত অর্থ পকেট কেটে খালী করতে না পারে সেদিকে জেলা প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।