জাতীয়

বাথরুমে মাদ্রাসাছাত্রকে ‘বলাৎকার’, হেফাজত নেতা সুপার গ্রেপ্তার

By Daily Satkhira

October 26, 2017

এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে আবদুল জব্বার মাহমুদ জিহাদী (৫৫) নামের রাজশাহীর এক হাফেজিয়া মাদ্রাসা সুপারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মাদ্রাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, আবদুল জব্বার মাহমুদ জিহাদী নগরীর ছোট বনগ্রাম এলাকার জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসার সুপার। তিনি পরিবার নিয়ে ওই মাদ্রাসার ভেতরে বসবাস করেন। তিনি হেফাজতে ইসলামের রাজশাহী শাখার অর্থ-সম্পাদক ও কওমি মাদ্রাসা স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য।

ওসি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ১৪ বছরের এক ছাত্র থানায় এসে তাকে বলাৎকারের অভিযোগ করে। তার বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলায়। সে ওই মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র। তার অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা থেকে সুপার জব্বারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তাঁর শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকায় গতকাল সকালে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়। পরে তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রের বাবা।

মামলায় ওই ছাত্রের বাবা উল্লেখ করেন, গত শুক্রবার দুপুরে ওই মাদ্রাসা সুপার নিজের চেম্বারের বাথরুমে ছাত্রকে বলাৎকার করেন।

বলাৎকারের শিকার ওই ছাত্র জানায়, সে মাদ্রাসার আবাসিক মেসে থেকে হেফজ বিভাগে পড়ে। গত শুক্রবার দুপুরে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাদ্রাসা সুপার তাঁর বাথরুমে কাপড় ধুতে দেন। এ সময় সুপার বাথরুমে গোসল করতে ঢোকেন। গোসল করার একপর্যায়ে তাকে ধরে বলাৎকার করেন। বিষয়টি কাউকে বললে মাদ্রাসা থেকে তাকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

ওই ছাত্র আরো জানায়, গত মঙ্গলবার সে বিষয়টি তার এক শিক্ষককে প্রথমে জানায়। পরে ওই শিক্ষক তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে বিকেলে তার বাবা রাজশাহীতে আসেন। এর পর রাতে তারা থানায় গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, অনেক ছাত্রের সঙ্গে মাদ্রাসা সুপার এ ধরনের আচরণ করেছেন। তাঁরা লজ্জায় বিষয়টি প্রকাশ করেননি। সুপারের এ ধরনের অপকর্মের কথা সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী জানতে পারেন। এ নিয়ে তিনি প্রতিবাদ করলে সুপার তাঁকে নির্যাতন করে জখম করেন। পরে তাঁরা সুপারের স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন।

মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক বলেন, ছাত্রদের সঙ্গে সুপার আবদুল জব্বারের এ ধরনের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় এর আগে চারজন শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ কারণে ভয়ে সুপারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলেন না।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি আমান উল্লাহ জানান, গ্রেপ্তারের পর মাদ্রাসা সুপার আবদুল জাব্বার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলাৎকারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।