জাতীয়

রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ

By Daily Satkhira

October 27, 2017

মিয়ানমারের রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কাছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অব্স্থান তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তিন সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পররাষ্ট্র বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাদের কাছে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি।রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ।’

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন প্রধান ইন্দোনেশিয়ার মারজুকি দারুসমান, প্রতিনিধি শ্রীলঙ্কার রাধিকা কুমারাস্বামী ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি গত রবিবার (২২ অক্টোবর) ঢাকা আসেন। পরদিন থেকে কক্সবাজার পরিদর্শনসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সহায়ক দল আগে থেকেই কক্সবাজারে কাজ করছিল। মূল দল এ সপ্তাহে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছে।’ তিনি বলেন, ‘দলের প্রতিনিধিরা কী দেখেছেন, এ বিষয়ে আমরা জানতে চাইলে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলেই তারা জানান।’

এই দল আবার আসবে কিনা, জানতে চাইলে, সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা আবার আসবেন বলে আমাদের ঈঙ্গিত দিয়েছেন।’

রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল এই স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে। যে মিশনের কাজ হচ্ছে, সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে একটি রিপোর্ট দেওয়া। প্রসঙ্গত, ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’-এর প্রতিনিধিরা মিয়ানমার যেতে চাইলেও দেশটির সরকার তাতে আগ্রহ দেখায়নি। এদিকে, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠনের পরপরই এর প্রতিনিধিরা আগ্রহী ব্যক্তি, গ্রুপ ও সংস্থার কাছে রাখাইনে ২০১১ সাল থেকে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান। ২০১২ সালে রাখাইনে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়। সে কারণে তারা ২০১১ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করছে। আগ্রহীরা তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে পারবেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমান জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে তার প্রথম মৌখিক বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের কাছে পরিষ্কার যে, বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটছে, যার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া এখনই প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলা, সচক্ষে অঞ্চলটি দেখা ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা আমাদের জন্য জরুরি। এ কারণে আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের অনুরোধ করেছি যেন আমাদের সব জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা বিশ্বাস করি, মিয়ানমার সরকার ও জনগণের স্বার্থে তারা প্রমাণসহ মত জানাবে।’

বাংলাদেশেও এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকর্মীরা কাজ করছেন জানিয়ে মারজুকি বলেন, ‘আমাদের রিপোর্ট সম্পন্ন করতে আমাদের আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে।’