নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি দশম সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা ১ আসনে জয় লাভ করলেও ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জনগণের আশা আকাক্সক্ষা পূরণ করতে পারেন নি। একই সময়কালে এখানকার যথাযথ উন্নয়ন তো হয়নি উপরন্তু নানামুখী দুর্নীতি হয়েছেÑ এমনটা দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করলেন তালা উপজেলা আ ’লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম। তার দাবি এই আসনে ইতিপূর্বে মহাজোটের সাংসদ ইঞ্জি. মুজিবুর রহমানও ব্যর্থ ছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে এসব বক্তব্য তুলে ধরেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন ২০০৮ এর নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী হিসাবে সাতক্ষীরা-১ (তালা কলারোয়া) আসনে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান জয়ী হয়েছিলেন। তিনি যোগাযোগ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানও হন। তা সত্ত্বেও তিনি জনগণের আকাংক্সক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন শেখ নুরুল ইসলাম। বুধবার সাতক্ষীরায় এক অনির্ধারিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক কালের চিত্র সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আবু আহমেদ, সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক শাকিলা ইসলাম জুঁই, খলিসখালি ইউপি চেয়ারম্যান ও বিটিভির সাতক্ষীররা প্রতিনিধি মোজাফফর রহমান ছাড়াও অনেক সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী উপিস্থিত ছিলেন। শেখ নুরুল ইসলাম বলেন ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার গ্রাম পুটিয়াখালিতে অবস্থান নেওয়া বিপুল সংখ্যক ভারতগামী হিন্দু উদ্বাস্তুকে পাক হানাদারবাহিনী লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। গ্রামবাসী অজ্ঞাত পরিচয় এমন ৭৯ জনের মরদেহ মাটিচাপা ও কপোতক্ষ নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেন। একই দিনে ভারতগামী উদ্বাস্তুদের সহায়তা দেওয়ার কারণে পাকহানাদাররা তার বাবা শেখ আবদুর রহমান ও বড় ভাই শেখ জালালউদ্দিনকে বাড়ি থেকে ধরে এনে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছিল। তিনি নিজেকে সেই শহিদ পরিবারের গর্বিত সন্তান দাবি করে শেখ নুরুল ইসলাম আরও বলেন ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনা শহিদদের জন্য তালার পারকুমিরায় একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করেন। কিন্তু আজ অবধি তা স্মৃতিসৌধে উন্নীত হয়নি বলে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন এই ব্যর্থতা ২০০৮ এর মহাজোট সাংসদ, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান ১৪ দলীয় জোট সাংসদের। শেখ নুরুল ইসলাম আরও বলেন ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেছিলেন। এমনকি তার অনুকূলে নৌকা প্রতীকও বরাদ্দ হয়েছিল। তিনি বলেন পরে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালা-কলারোয়ার এই আসনটিতে পরিবর্তিত মনোনয়ন দেওয়া হয় ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের সমুদয় ভোট নিয়ে জয়লাভ করলেও আজ অবধি নিজদলের উল্লেখযোগ্য ভোট ব্যাংক তৈরি করতে পারেননি। তিনি আরও বলেন ১৪ দলীয় এই প্রার্থীর কারণে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবারও এই আসনে ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী অথবা মহাজোটগতভাবে জাতীয়পার্টির প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আওয়ামী লীগ যেমন তা মেনে নিতে পারবে না, তেমনি তার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন দলীয় নেতাকর্মীরা। বর্তমান সাংসদের আমলে সাতক্ষীরার তালা কলারোয়া আসনের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা আওয়ামী লীগকে পেছনে ফেলে নিজ দলের গুটিকয়েক লোক নিয়ে কাজ করে আসছেন বলে তার দাবি। তিনি বলেন এই সময়ে টিআর, কাবিখা, কপোতাক্ষ খনন, স্কুল কলেজে নিয়োগ, সোলার প্যানেল প্রকল্পসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, আমি এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। মনোনয়ন পেলে আমি জনগণের পূর্ণ সমর্থন লাভ করবো। এ জন্য সংবাদকর্মীদের সহায়তা প্রয়োজন।