কলারোয়া

ব্রজবাক্সায় বাড়িতে অসামাজিক কাজ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

By daily satkhira

October 16, 2016

কলারোয়া প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ৯নং হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাক্সা গ্রামের সেলিনার বাড়িতে অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে কলারোয়া প্রেসক্লাবে উপজেলার ব্রজবক্সা গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী দিগং ও রঘুনাথপুর গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষ এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসির পক্ষে ইউনিয়নের ৪,৫ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন লিখিত বক্তব্য বলেন, ব্রজবক্সা গ্রামের আব্দুস সোবহানের মেয়ে সেলিনা খাতুন বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতের অন্ধগলি মুম্বাই শহরে অবস্থানকালে নারী ও শিশু পাচারকারীচক্রের সাথে তার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর সেলিনা খাতুন মাঝে মাঝে দেশে ফিরে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও শিশু ভারতে পাচার করতে থাকে। এ ঘটনায় ইতোপূর্বে থানা পুলিশ তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পিতার দেয়া জমিতে বাড়ি তৈরি করে নিজে দেহ ব্যবসা শুরু করে। এরপর কলারোয়া উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী শার্শা, ঝিকরগাছা, বাকড়া, রাজগঞ্জ, মনিরামপুর, কেশবপুর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা, আশাশুনি, তালা ও শ্যামনগর উপজেলা থেকে স্বামী পরিত্যক্তসহ বিভিন্ন ধরণের মেয়ে নিয়ে ওই বাড়িতে দেহ ব্যবসা চালায়। এক পর্যায়ে সেলিনা খাতুন বাড়িটি একটি মিনি পতিতলায় গড়ে তুলে নিজেকে পতিতার সর্দারানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর ফলে এলাকার কিছু কলেজগামী ছেলে-মেয়েরা ওই অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়তে থাকে। ইতোমধ্যে স্থানীয় অভিভাবক, চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ এলাকার সচেতনমহল ওই কাজে বাধাঁ দেয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে ধর্ষণ মামলা দেবে বলে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে সেলিনা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, এরইমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন সেলিনাকে দুইবার অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরে থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। জেল থেকে বাড়িতে এসে আবারও দেহ ব্যবসা শুরু করে। এভাবে সে রাতারাতি লাখপতি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন আরো বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মেয়েদের দিয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে তাদের নিকট থেকে ঘর ভাড়া, খাওয়া খরচ কেটে রেখে বাকি টাকা তাদেরকে দেওয়া হয়। তবে প্রতিটা খরিদার নিকট থেকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত টাকা নেয়া হয়। তাই এভাবে বছরের পর বছর যদি কাজটি চলতে থাকে যুবক ছেলে-মেয়েরা ওই কাজে আসক্তি হয়ে পড়বে এবং এলাকার পরিবেশ দারুণ ভাবে ব্যাহত হবে। তিনি আরো বলেন, ওই সেলিনার মাদকাসক্ত ছেলে আজিজুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার সাইকেল, মটরসাইকেল, মটরসহ পানির পাম্প, সোলারের ব্যাটারী, সিঙ্গার মেশিন চুরি করে আসছে। এরই জের ধরে গত ৭ অক্টোবর আজিজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ৮-১০ জন ডাকাত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে ব্রজবাক্সা গ্রামের আব্দুল গণি সরদারের বাড়িতে হানা দেয়। এসময়  বাড়ির লোকজন জাহিদ নামে একজনকে হাতে নাতে ধরে থানায় পুলিশে সোর্পদ করে। এরপর ৯ অক্টোবর এলাকার সচেতন নারী-পুরুষ সংঘবদ্ধ হয়ে আজিজুলের মা দেহ ব্যবসায়ী সেলিনার নিকট ছেলে কোথায় আছে জানতে যায়। এসময় সেলিনাসহ তার ঘরে থাকা দুই দেহ ব্যবসায়ী ওই সচেতন নারী-পুরুষের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে এলাকার নারী-পুরুষরা সেলিনাসহ ওই দেহব্যবসায়ীকে ধরে থানা পুলিশে সোর্পদ করে। থানা থেকে ‘অসামাজিক কাজ আর করবে না’ বলে মুচলিকা দিয়ে এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট ক্ষমা চেয়ে বাড়ি আসে। পরের দিন রাজগঞ্জ এলাকার রোজি ও ঝিকরগাছার নাইড়া এলাকার আরেকজন দেহব্যবসায়ীকে নিয়ে চিকিৎসার নামে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নামে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দেয়ার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।  এমতাবস্থায় এলাকার শতশত মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই বাড়িতে যাতে অসামাজিক কাজ বন্ধ হয় তার দাবিতে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন। উল্লেখ্য, উক্ত ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জড়িয়ে সাতক্ষীরার একটি পত্রিকায় গত ১২/১০/২০১৬ইং তারিখে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উক্ত প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আ.লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, আব্দুল গফুর মাস্টার, অধ্যক্ষ আবির হোসেন বিল্লাল, ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তারসহ শতশত এলাকাবাসি। এদিকে মমতাজ আহম্মেদ কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ আবির হোসেন বিল্লাল জানান, অসৎ উদ্দেশ্য চিরতার্থ করার লক্ষ্যে কথিত পতিতারাণী সেলিনা খাতুন জনগণের হাতে ধৃত হয়ে পুলিশে সোপর্দের পর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পাওয়ার দু’দিন পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অসুস্থতার ভান করছে। পাশাপাশি ধর্ষণ, নির্যাতনসহ অন্যান্য মামলা করার পায়তারা চালাচ্ছে। এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করে অধ্যক্ষ আবির আরো বলেন, গুটি কয়েক কুচক্রি ব্যক্তির ইন্ধনে সেলিনা এরূপ অনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিনিয়ত করে যেতে পারছে, তবে মিথ্যা কখনো চিরস্থায়ী হয় না। এলাকার বিপুল জনগোষ্ঠির দাবি- এহেন কুকর্ম এখনই বন্ধ করা না গেলে এলাকার সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়তে পারে।