নিজস্ব প্রতিবেদক : অপহরণ করে বিয়ের নামে ভূয়া কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শিমুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে(১৪) টানা ৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রী নিজেই বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামি করে ২ নভেম্বর সাতক্ষীরা নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন, দেবহাটা থানার গোবরাখালি গ্রামের সামাদ মোল্লার ছেলে মোস্তাকিম হোসেন (২১), মোস্তাকিমের চাচা বেলায়েত মোল্লাা ও চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক। স্কুলছাত্রী বলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় মুখে রুমাল দিয়ে মুস্তাকিম ও তার সহযোগীরা আমাকে অজ্ঞান করে একটি মাইক্রোবাস যোগে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে আমাকে নেওয়া হয় যশোর। সেখানে যেয়ে আমাকে এক হুজুরের কাছে নিয়ে লাল রং এর একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং বলে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এরপর আমি কান্নাকাটি শুরু করলে সে আমাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যেয়ে আমাকে একটি হোটেলে রাখে। আমার উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। ছাত্রীর নানা আলাউদ্দীন গাইন বলেন, ‘মেয়েটি ছোটবেলা থেকে আমার কাছে মানুষ। আমাদের কাছে থেকে সে লেখাপড়া করে। ঘটনার দিন আমরা তাকে অনেক খোজাখুজি করেছি। শেষবেশ না পেয়ে আমরা দেবহাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। গত ৩১ নভেম্বর আমার নাতনিকে গোবরা খালী গ্রামের দবির সানার ছেলে শফিকুলের বাড়িতে রাখে। পরবর্তীতে শফিকুল আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে নিতে বলে। গত ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আমার নাতনিকে আমাদের হাতে তুলে দেয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ছোট মেয়ে। সে কিছুই বোঝে না। তাকে ৫ দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। আমার ভাগ্নে বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরবর্তীতে সকল ভীতি উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা আদালতে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। এ দিকে মামলা করায় অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামি শফিকুল ও তার সহযোগীরা আমাদেরকে মামলা তুলে নিতে উপর্যুপুরী হুমকি ধামকি দিচ্ছে।’ তবে শফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়নি এবং কোন প্রকার হুমকি ধামকি দিচ্ছি না।’ এ ব্যাপারে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন বলেন, ‘একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে এমন অভিযোগে একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছিলো। পরবর্তীতে মেয়ের বয়স কম থাকায় তাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয় নি।’