আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান স. ম আব্দুর রউফ কমপ্লে¬ক্স ও এতিমাখানা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে সেখানে প্রচুর অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। এছাড়া তিনি তার চাকরি ও বদলি সংক্রান্ত বিষয়েও নানা অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ সব ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক হোসেন আলী খোন্দকার বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে তদন্ত করেন। তদন্তকালে অভিযোগের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সত্যরঞ্জন মন্ডল, জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য অ্যাড. শাহানাজ পারভিন মিলি, মাহাফুজা সুলতানা রুবি সাক্ষ্য দেন। এ ছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার সামনে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী এএনএম মঈনুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য ওবায়দুর রহমান, মহিতুর রহমান, সৈয়দ আমিনুর রহমান বাবু সাক্ষ্য দেন। জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমান আত্মপক্ষ সমর্থন করে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বক্তব্য উপস্থাপনকালে মাহাবুবর রহমান তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ইন্টারমিডেট এটা অস্বীকার না করেই ১০ বছরের অভিজ্ঞতাকে পদোন্নতির জন্য যথেষ্ট বলে দাবি করেন। জালালপুরে বদলীর আদেশের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে স্টে চাননি বরং সেখানে যোগদান না করতে পারায় বেতন ভাতা যাতে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ থেকে পেতে পারেন সেজন্য আবেদন করেছিলেন বলে জানান। এ ছাড়াও তিনি জেলা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত না হওয়া জমিতে আব্দুর রউফ কমপে¬ক্স ও এতিমখানার ভবন নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে শিক্ষক কর্মচারির বেতন ও শিক্ষার্থীদের বোর্ডিং খরচ বাবদ যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক তিনি যে কোন কাজ করতে রাজি আছেন বলে দাবি করেন। তবে তিন বারের বদলী সংক্রান্ত আদেশগুলো তিনি হয়রানিমূলক বলে দাবি করেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের ষাঁটলিপিকার থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে এসএম মাহাবুবর রহমান একই স্থানে ২৭ বছর কাজ করার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে তিনি তার বাবার নামে মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান স.ম আব্দুর রউফ কমপে¬ক্স ও এতিমখানা তৈরি করে সভাপতি হয়ে জেলা পরিষদ থেকে নেওয়া ও প্রকল্প বরাদ্দ বাবদ কয়েক কোটি টাকা শিক্ষক- কর্মচারিদের বেতন, শিক্ষার্থীদের বোর্ডিং খরচ ও অবকাঠামো উন্নয়নের নামে বেআইনিভাবে অপচয় করছেন মর্মে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে লিগ্যাল নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সত্যরঞ্জন মন্ডল। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর গত ২৪ অক্টোবর ওই প্রতিষ্ঠান ও জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ওই দপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালককে নির্দেশ দেন। এ চিঠি পাওয়ার পর খুলনা বিভাগীয় পরিচালক হোসেন আলী খোন্দকার গত ২৪ অক্টোবর এক চিঠিতে আব্দুর রউফ কমপ্লে¬ক্স ও এতিমাখানার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অনিয়মে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, দলিলপত্রাদিসহ ৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় উপস্থিত হয়ে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেন। সে অনুযায়ি বুধবার এ তদন্ত হয়। পরবর্তীতে তদন্তকারি কর্মকর্তা ধুলিহরে মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান স.ম আব্দুর রউফ কমপ্লে¬ক্সে ও এতিমখানার কার্যক্রম পরিদর্শন ও সেখানকার অভিযোগ সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করেন।