অনলাইন ডেস্ক : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কয়েকশো মানুষ একটি হিন্দু গ্রামে হামলা করার সময় পুলিশের পাল্টা গুলিতে অন্তত এক জন নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে, ঐ হিন্দু গ্রামের একজন ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্ট দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে সেখানে হামলা করা হয়। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, যার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেই টিটু রায়ের বাড়ি গঙ্গাচড়ার ঠাকুরতাড়ি গ্রামে হলেও তিনি সেখানে থাকেন না। নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন। টিটু রায়ের কথিত এক ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সেখানে কদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। কয়েকদিন আগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এ নিয়ে একটি মামলাও করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ আসামীকে ধরা হবে বলে কথা দেন। ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, “শুক্রবার জুমার নামাজের পর হঠাৎ স্থানীয় কিছু মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে এসে রাস্তা অবরোধ করেছে। একটি মিছিলের বড় অংশ গিয়ে হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ করে। হিন্দু পাড়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ তখন বাধা দেয়। বাধা না মেনে যখন তারা দুএকটি বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে, তখন পুলিশ শটগানের গুলি চালায়।” খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, পুলিশের গুলিতে একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হন বলে তারা খবর পাচ্ছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তিনি জানান হামলাকারীদের সংখ্যা ছিল কয়েকশো। যার কথিত ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে এই ঘটনা, সেটি আসলেই তার কিনা, জানতে চাইলে ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, “সেই তদন্তের সুযোগ তো আমাদের দেয়া হয়নি। আমরা মামলা নিয়েছি। এখনো তদন্ত চলছে। আসামী গ্রেফতারের জন্য নারায়ণগঞ্জে লোক পাঠানো হয়েছে। তাকে ধরা গেলে, ফেসবুক বিশ্লেষণ করলে তার পর বিস্তারিত জানা যাবে।”
উল্লেখ্য, ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘুদের গ্রামে হামলার এরকম ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও ঘটেছে। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে এক বৌদ্ধপল্লীতে একই অভিযোগ তুলে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। আর গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অনেকটা একই কায়দায় একটি হিন্দু পল্লীতে হামলা চালানো হয় একই ধরণের অভিযোগ তুলে।