ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, কালিগঞ্জ : কালিগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুলের ইসলামের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় চাকুরি দেয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের নিকট থেকে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় ২৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সী এইচএসসি পাশ বেকার যুবক-যুবতীদের নিকট থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলার ১২ ইউনিয়ন থেকে ২ হাজার ৩৮৩ জনের আবেদনপত্র প্রাথমিক ভাবে গৃহীত হয়েছিল। গত ১৮ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চাকুরি প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়। ওই নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান এবং সদস্যসচিব ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার কামরুল ইসলাম। এই নিয়োগকে ঘিরে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে কর্মরত একটি গ্রুপ প্রার্থীদের চাকুরি নিশ্চিত করার প্রলোভন দেখিয়ে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে। এই টাকা আদান প্রদানের বিষয়টা হয়েছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চাকুরি প্রাপ্ত ট্রেনিংকারী অভিযোগ করে বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিসে দু’বছর মেয়াদী প্রকল্পে চাকুরির সুযোগ হওয়ায় বেকার যুবক-যুবতীদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্থী ফিরে আসে। কিন্তু এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার অর্থবাণিজ্য অনেককে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ করেছে। চাকুরি নিশ্চিত করার প্রলোভনে প্রতি প্রর্থীর নিকট থেকে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। ২ হাজার ৩৮৩ জন চাকুরির জন্য আবেদন করেছেন। চাকুরি পাওয়ার জন্য অধিকাংশ প্রার্থীকে উৎকোচ দিতে হয়েছে। গত ২৩ মার্চ সাক্ষাতকার পর্ব শেষ হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ২ হাজার ২৪১ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন পার হলে ১ হাজার ব্যাক্তি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তিন মাসের ট্রেনিংয়ের দেড় মাস পাড় করেছেন। এখনে তিন মাসের ট্রেনিংয়ে প্রতিদিন ১শত টাক করে দেওয়ার কথা থাকলেও তিন মাসে তাদেরকে দেওয়া হবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এখনও ঘুষ বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম। তার নেতৃত্বে অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কাম অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনসহ একটি গ্রুপ। তিনটি কোটায় নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে বলে প্রচার দেয়া হয়েছিল। এক্ষেত্রে যারা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে পেরেছে তারা প্রথম কোটায় নিয়োগ পেয়েছে যারা চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়েছে তাদের মধ্যে ১ হাজার প্রার্থীর চাকুরি নিশ্চিত হয়েছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে। এবার ২য় ও ৩য় কোটায় ১১ শত প্রার্থী ট্রেনিংয়ের জন্য জয়েন্ট করবে ২ ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে। এদের থেকেও নেওয়া হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী টাকা। এব্যাপারে জানতে চাইলে কালিগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়। তার নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু হচ্ছে। আবেদনকারীদের কারও কারও বয়স কম থাকায় বা অন্যান্য কারণে কিছু প্রার্থী বাদ পড়েছে। ট্রেনিং শেষে আরও কিছু বাদ পড়তে পারে। তবে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। চাকুরি দেয়ার কথা বলে তার দপ্তরের কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তাহলে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে এর দায় দায়িত্ব তার উপরে বর্তায় বলে স্বীকার করে বলেন, এব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।