প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে সিনহার পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছালে তা গ্রহণ করা হয় বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় সিঙ্গাপুর থেকে কানাডার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পূর্বে তিনি পদত্যাগ করেন বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি সূত্রগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। ঢাকা ত্যাগের পূর্বে এক খোলা চিঠিতে বিচারপতি সিনহা দাবী করেন তিনি অসুস্থ নন। ছুটি শেষে তিনি দেশে ফিরে আসবেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন।
বেশ কিছুদিন সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় তার বড় কন্যার বাসায় অবস্থানের পর গত সোমবার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট হাসপাতালে তিনি চারদিন চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এক অজানা কারণে তিনি দেশে না ফিরে কানাডায় উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ত্যাগ করেন। কানাডায় যাওয়ার পূর্বে তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেন বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।
উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে গত জুলাই মাসে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন, সংসদ ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ দেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। রায়ের ওই পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রধান বিচারপতির সমালোচনায় সরব হন সরকার দলীয় মন্ত্রী-নেতারা। এমনকি এসব পর্যবেক্ষণ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহারের জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানানো হয়। রায় নিয়ে এই টানাপড়েনের মধ্যেই ১৩ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যান তিনি। ছুটিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে বসে তিনি পদত্যাগ করলেন।
তার অনুপস্থিতিতে গত এক মাস ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যৈষ্ঠ বিচারক বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা।