কলারোয়া প্রতিনিধি: জমে উঠেছে স্থগিত হওয়া কলারোয়া উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহনের প্রস্তুতি। জয়ী হতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে বারংবার পৌছুচ্ছেন প্রার্থীরা। স্থগিত উপজেলার ৮নং কেরালকাতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড এবং ১০নং কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩নং ও ৭নং ওয়ার্ডে আগামি ৩১ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতীহীনভাবে ভোটগ্রহন হবে। গত ২২মার্চ অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা ও মারামারি অভিযোগে এ দু’ ইউনিয়নের ৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ৮নং কেরালকাতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বলিয়ানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২হাজার ১’শ ৫জন। সেখানে ৫টি বুথে ভোটাররা তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করবেন। ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৫জন। স্থগিত হওয়া বলিয়ানপুর কেন্দ্র ব্যতিত ২২মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া ভোট গ্রহনে অন্য ৮টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স.ম মোরশেদ আলীর চেয়ে ৮৩ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আ.লীগ নেতা আ.হামিদ সরদার। স্থগিত হওয়া কেন্দ্র ব্যতিত অন্য কেন্দ্রে ৫জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট পেয়েছেন আনছার আলী ২৩টি, আ.হামিদ সরদার ৪হাজার ৬’শ ৫২টি, বিএনপির প্রার্থী জহুরুল ইসলাম ১হাজার ৮১টি, স্বতন্ত্র ফারুক হোসেন ৭’শ ৪৭টি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান আ.লীগের স.ম মোরশেদ আলী ৪হাজার ৫’শ ৬৯টি। সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থী রয়েছেন ৩জন। আর সাধারণ আসনের প্রার্থী রয়েছেন রবিউল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও ইব্রাহিম হোসেন। পুরুষ মেম্বরদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন রবিউল ও শহিদুল। এখানে রির্টানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হামিদ।এদিকে, ১০নং কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে শাকদহা দাখিল মাদরাসা কেন্দ্র ও ৭নং ওয়ার্ডে কলাটুপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শাকদহ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১হাজার ২’শ ৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫’শ ৯২জন ও মহিলা ভোটার ৬’শ ১৪জন। ওই ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী রয়েছেন যমুনা খাতুন, মর্জিনা খাতুন, রেহানা পারভীন ও সাজেদা খাতুন। সাধারণ আসনে মেম্বর প্রার্থী রয়েছেন মমিনুর রহমান, মুনছুর আলী, নজরুল ইসলাম, এনামুল হক ও আ.আলিম খান। ৭নং ওয়ার্ডের কলাটুপি কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১হাজার ৭’শ ৮টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮’শ ৩০ ও মহিলা ভোটার ৮’শ ৭৮জন। সেখানে সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থী রয়েছেন আসমা আরা, নাইস আরা, মনোয়ার খাতুন ও লাইলী খাতুন। সাধারণ আসনের পুরুষ মেম্বর প্রার্থী রয়েছেন মফিজ উদ্দীন, মনিরুল জামান ও সুলতান সরদার। কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৮জন। চেয়ারম্যান পদে শাকদহ ও কলাটুপি -এ দু’টি কেন্দ্র ব্যতিত অন্য ৭টি ওয়ার্ডে ভোট পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন (আনারস প্রতীক) ১হাজার ৯’শ ৩২টি, জাহিরুল ইসলাম (টেবিল ফ্যান) ১’শ ৫০টি, আ.লতিফ (টেলিফোন) ৩’শ ২৪টি, আ.লীগের আসলামুল আলম আসলাম (নৌকা প্রতীক) ১হাজার ১’শ ৭০টি, খায়রুল ইসলাম (হাতপাখা) ১৬টি, বিএনপির শাহাদত হোসেন (ধানের শীষ প্রতীক) ৭’শ ৮টি, স্বতন্ত্র সাঈদ আলী গাজী (চশমা প্রতীক) ২হাজার ১’শ ৯৩টি এবং শেখ জাকির হোসেন (মোটরসাইকেল প্রতীক) ৯’শ ৮৬টি। স্থগিত দু’টি কেন্দ্র ব্যতিত অন্য ৭টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় সর্বাধিক ভোট পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের (আনারস) চেয়ে ২’শ ৬১ ভোট বেশি পেয়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীকের সাঈদ আলী গাজী। সেক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ভোট পাওয়া প্রার্থীর চেয়ে নৌকা প্রতীকের আসলামুল আলম আসলাম ১হাজার ২৩ ভোট কম পেয়ে পিছিয়ে আছেন তৃতীয় অবস্থানে। কুশোডাঙ্গা ইউপি নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। তিনি জানান, ভোট সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ বাস্তবায়ন করা হবে। দু’টি ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা ইতোমধ্যে বাড়ি বাড়ি যেয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন ভোটে এগিয়ে থাকা প্রার্থীরা। ভোটাররা তাদের দাবি-দাওয়া পেশ করছেন প্রার্থীদের কাছে। কর্মীসভা, পথসভাসহ ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। সংশ্লিষ্ট ৩টি ওয়ার্ড পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। তবে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ দেখা যাচ্ছে না। পিছিয়ে থাকা অনেক প্রার্থী ভবিষ্যতের সুবিধা লক্ষ্য করে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের সাথে সমঝোতাও করছেন বলে জানা গেছে। শেষ সময়ে এসে পুনরায় নিজেদের ‘একটু দামি’ মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। সবমিলিয়ে জমে উঠেছে ওই দু’ ইউনিয়নের ৩টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের পূর্বাবস্থা। তবে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি টানটান উত্তেজনাও পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভোটাররা নির্বিঘেœ তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। ২২মার্চের পূনরাবৃত্তি যেন কোনভাবেই না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য সংশ্লিষ্টদের। ইউপি নির্বাচনের সমন্বয়কারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন বদ্ধ পরিকর। আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। এ ব্যাপারে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল হক শেখ জানান, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আইনশৃংখলা বাহিনী সচেষ্ট ও সজাগ। যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।