নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জোনাইল ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার ওয়াল্টার উইলিয়াম রোজারিও (৪০) আকস্মিক নিখোঁজ হয়েছেন। উপজেলার বনপাড়া মিশন মার্কেট থেকে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জোনাইল ধর্মপল্লীতে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে তার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ থানা পুলিশ ও প্রশাসনকে জানালে তাকে উদ্ধারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
তার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বনপাড়া ও জোনাইল ধর্মপল্লীবাসী ও পুলিশ প্রশাসন। পাল-পুরোহিত ওয়াল্টার বনপাড়া পৌর শহরের মিশন পাড়া এলাকার মৃত সিলভেস্টার রোজারিও’র ছেলে। তার বাড়িটি আলোচিত জঙ্গী হামলায় নিহত সুনীল গোমেজের বাড়ি থেকে মাত্র একশ’ গজ পশ্চিমে।
ওয়াল্টারের বড় ভাই ব্যবসায়ী প্রেমল রোজারিও জানান, বনপাড়ার একটি প্রেসে বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ সংকলন প্রকাশের জন্য কিছু কাজ শেষে তিনি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জোনাইলের উদ্দেশ্যে তার ব্যবহৃত ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলযোগে রওনা দেন। রাত ৮টার দিকে ওই ধর্মপল্লীর প্রধান পাল-পুরোহিত ফাদার সুব্রত পিউরিফিকেশন তার ফিরে না আসার সংবাদ জানান। পরে আত্মীয়-স্বজনরা হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ-খবর নেয়ার পর তাকে খুঁজে না পেয়ে দুপুর ১টার দিকে থানা পুলিশ, জেলা ডিবি পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, আদগ্রাম এলাকার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রাক্তণ ছাত্র কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষক ফাদার ওয়াল্টারকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিলো।
এদিকে ফাদার ওয়াল্টারের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বনপাড়া ধর্মপল্লীসহ উপজেলার ৪টি ধর্মপল্লীবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব ধর্মপল্লীর অনেকেই আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকায় পোপের উপস্থিতিতে খ্রিষ্টযাগে অংশ নিতে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এ ঘটনার পর পোপের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চাচ্ছেন না তারা।
বড়াইগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) হারুন-অর-রশিদ জানান, ফাদার ওয়াল্টারকে উদ্ধার করতে ব্যাপক পুলিশী অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদারসহ পুলিশের অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে নাটোরের গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাই জানান, তাকে খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকেও জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।