ডেস্ক রিপোর্ট : আশাশুনিতে অনুমতি ছাড়াই প্রতিনিয়ত চলছে অশ্লীল নৃত্য ও রমরমা জুয়ার আসর। আর এতে করে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে উপজেলার সচেতন মহল। জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলছেন, এ ব্যপারে আমার থেকে কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাজরা, শ্রীউলা, আশাশুনি, বড়দল, কাদাকাটি এলাকায় একের পর এক যাত্রার বা অনুষ্ঠানের নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর পরিচালনা করে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি এবং স্থানীয় গুটি কয়েক প্রভাবশালী নেতা। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি রাতে মোটা অংকের লেনদেনের চুক্তিতে উপজেলা প্রশাসন প্রকাশ্যে নগ্ননৃত্য ও জুয়ার আসর চালতে সহযোগিতা করছে। আর এ নগ্ন নৃত্য ও রমরমা জুয়ার মিছিলে যোগ দিচ্ছে স্কুল-কলেজের ছাত্র, যুবকসহ বয়ঃবৃদ্ধরা। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্তে সাক্ষী দেয়া ব্যক্তির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলেও আশাশুনি উপজেলা পুলিশ নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসরের নিরাপত্তা দানে করিৎকর্মা! উপজেলার খাজরাবাজায় চর ভরাট আদর্শ গ্রাম বালির মাঠে চলছে চরম অশ্লীলন নৃত্য ও জুয়ার রমরমা আসর। মাঝে কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবারও অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানটিই ঝলমলে আলোতে আলোকিত করে আলোর মধ্যেই পকেট কেটে মানুষকে করছে নিঃশ্ব। আর এ নিঃশ্ব মানুষগুলোর পরিবারের সদস্যরা করছে হাহাকার। তাদের এ হাহাকারের ওজন প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার পকেটে যাওয়া অর্থের ওজনের চেয়ে কম বিধায় তাদের হাহাকার শুধু বাতাসে ভেসেই যাচ্ছে। গ্রামের সহজ-সরল খেটে খাওয়া মনুষগুলো লোভের বশবর্তী হয়ে রমরমা জুয়ায় নিজেকে মেলেধরে বাড়ি ফিরছে পকেট খালি করে। এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বোড মালিকরা। মেলা মাঠের এক কোনায় সারি সারি জুয়ার কোট। সাধারণ মানুষ ভিড় করছে এই কোট গুলোকে ঘিরে, পাশেই চলছে যাত্রার নামে নগ্ন নৃত্য। এখানে ভিড় করে আছে শিশু, কিশোর, যুবক এমনকি বৃদ্ধরাও। সরেজমিন দেখা গেছে, যাত্রার নামে সেখানে চলছে নগ্ন নৃত্য। প্রথমে দিকে পোশাক পরে স্টেজে আসলেও স্টেজ ত্যাগ করার সময় পোশাক কুড়িয়ে নিয়ে আসে অন্য একজন আর নৃত প্রদর্শন করতে আসা কিশোরীটি গ্রিন রুমে ফিরে প্রায় পোশাক ছাড়াই। আর এ দেখে উল¬সিত হয়ে চিৎকার দিয়ে কিশোরীদের নগ্ন হতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। যে যত বেশি খোলা মেলা হচ্ছে দর্শকরা তার দিকেই ছুড়ে দিচ্ছেন তত বেশি টাকা। কেউ কেউ কিশোরীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন টাকা। প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করার এই খেলায় ধ্বংস হচ্ছে উপজেলার কিশোর ও যুবকদের ভবিষ্যৎ। ঘরে ঘরে বাড়ছে অশান্তি। একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রশাসন, কিছু সাংবাদিকসহ বিভিন্ন দফতরকে মোটা অংকের টাকা দিচ্ছে জুয়া কর্তৃপক্ষ। মেলা ও জুয়ার আসরের পরিচালকরা বলছেন, “পুলিশ, প্রশাসন ও সাংবাদিকদেরকে আমরা ম্যানেজ করে নিয়েছি। আমাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারবে না।” আশাশুনির খাজরায় জুয়া বোর্ডের মূল নায়ক শহিদুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি গোড়া ম্যানেজ করে নিয়েছি। আমার নামে কোন নিউজ হবে না। আর ওসি সারকেও ম্যানেজ করে আমরা খেলা করছি।” আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম শাহীন জানান, জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের ব্যপারে আমার কিছু জানা নেই। যদি এ ধরনের কর্মকা- হয়ে থাকে তাহলে আমরা মেলা বন্ধ করে দিব এবং যারা এই কর্মকা-ের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থ্যা নিব।” আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুষমা সুলতানা জানান, “এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”