স্বাস্থ্য

ডায়েট পানীয়তে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি দ্বিগুণ

By Daily Satkhira

October 22, 2016

ডেস্ক রিপোর্ট: অনেকেই ওজন বেড়ে যাওয়া বা ডায়াবেটিসের ভয়ে পছন্দের চিনিযুক্ত কোমল পানীয়টি ছেড়ে চিনিমুক্ত বিকল্পটি বেছে নেন। তাদের অনেকেই মনে করেন, এতেই ডায়াবেটিস ও স্থূলতা থেকে অনেকটা বেঁচে যাওয়া সম্ভব।

কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, এই ‘ডায়েট’ পানীয় তার চিনিযুক্ত জাতভাইয়ের মতো একইরকম ক্ষতিকর। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন এই পানীয় মাত্র দু’গ্লাস করে পান করলেই ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ডায়েট কোক, ডায়েট পেপসি, ফ্যান্টা জিরোর মতো ক্যালরিবিহীন কোমল পানীয়গুলো মানুষকে আরও ক্ষুধার্ত করে তোলে; যার ফলে মানুষ আরও বেশি চিনিযুক্ত স্ন্যাক্স খেতে অস্থির হয়ে উঠে।

আরও সন্দেহ করা হচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল সুইটনার বা কৃত্রিম উপায়ে খাবার মিষ্টি করার উপাদানগুলো পাকস্থলিতে থাকা উপকারি ব্যাক্টেরিয়ার কার্যকলাপ ব্যাহত করে। এ কারণে মানবদেহে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউটের প্রধান গবেষক জোসেফিন লফেনবর্গ বলেন, ডায়েট পানীয় ‘ক্ষুধাকে ত্বরান্বিত করে’, যার ফলে ওজন

বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এছাড়া আর্টিফিশিয়াল সুইটনার দেহের ফ্যাট টিস্যু ও পাকস্থলির ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে। এর ফলে মানবদেহের গ্লুকোজ সহ্য করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষণাদলটি ২ হাজার ৮৭৪ জন ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালান। গবেষণার জন্য এক বছর ধরে তাদের পানীয় গ্রহণের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, যারা দিনে দুই বা তার চেয়ে বেশি মিষ্টি পানীয় গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা অন্যদের থেকে প্রায় আড়াই (২.৪) গুণ বেশি। এই পানীয়ের মধ্যে রয়েছে চিনিযুক্ত প্রচলিত কোমল পানীয় এবং ডায়েট কোকের মতো কৃত্রিমভাবে মিষ্টি পানীয়।

অন্যদিকে, দিনে ৫টি বা তার বেশি চিনিমুক্ত কোমল পানীয় এ ধরণের ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়িয়েছে সাড়ে ৪ গুণ।

গবেষণাটি থেকে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে এসেছেন, কৃত্রিম উপায়ে মিষ্টি পানীয় চিনিযুক্ত পানীয়ের মতোই ক্ষতিকর। কেননা, প্রতিদিন ২শ’ এমএল চিনিযুক্ত পানীয় পান ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। আর ডায়েট পানীয়ের ক্ষেত্রে তা ১৮ শতাংশ।

‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব এন্ডোক্রাইনোলজি’তে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।