লক্ষ্মীপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি, সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। এতে দুজনের অপ্রত্যাশিত ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন ও চিকিৎসকদের মধ্যে বৈঠক হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে এ সমঝোতা হয়। এ সময় তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ক্যামেরাবন্দি হন।
ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটি আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করেছি। প্রশাসনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আমরা একে অপরকে চিনেছি, জেনেছি, বুঝেছি। একে অপরকে চিনতে না পারায় ঘটনাটি ঘটেছে। এখন আমরা লক্ষ্মীপুরের উন্নয়নের স্বার্থে ৪ তারিখের ঘটনা ভুলে গেছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম, পুলিশ সুপার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. মো. মোস্তফা খালেদ আহমদ, ডা. আশফাকুর রহমান মামুন, ডা. জাকির হোসেন ও লক্ষ্মীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা।
গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে শহরের জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকার কাকলি শিশু অঙ্গনের (বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) প্রবেশমুখে এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও সাবেক সিভিল সার্জন শরীফের মধ্যে বাকবিতণ্ডার পর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ দিয়ে আটক করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সালাহ উদ্দিন শরীফকে তিন মাসের বিনাশ্রম জেল দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে কারাগারে পাঠায়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।
একদিন পর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপিলের পর বিচারক মীর শওকত হোসেন পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ওই চিকিৎসকের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালতে চিকিৎসকের কারাদণ্ডের বিষয়ে জনস্বার্থে দুজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ হাজির থাকতে তলব করেছেন। এ সময় সালাহ উদ্দিন শরীফকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সেই এডিসি শেখ মুর্শিদুল ইসলামকে ওএসডি করা হয়। এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে পদায়ন করা হয়।
পরে বুধবার বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সালাহ উদ্দিন শরীফকে আপিলে বেকসুর খালাস দেন আদালত।