বিক্ষোভ-সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীর। জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনী বলপ্রয়োগ করলে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। শুধু গাজা উপত্যকাতেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত দুইজন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫০ জন।
জুমা’র নামাজের পর জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের বাইরে এবং গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি। পশ্চিম তীরের হেবরন, বেথেলহেম, রামাল্লাসহ পুরো ফিলিস্তিনজুড়েই এমন বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসব বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনী বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ইসরায়েলি বাহিনীর কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটের জবাবে পাল্টা পাথর নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ-বিক্ষোভ ঠেকাতে পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।
রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক মানুষ। এ সময় তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুতুল দাহ করেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে নিক্ষেপ করা একটি রকেট ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্ফোরিত হয়েছে। জবাবে ইসরায়েলি ট্যাংক ও বিমান থেকে গাজায় হামলা চালানো হয়েছে।
তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে একটি মসজিদের বাইরে সমবেত হন তিন হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী। এ সময় তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী নানা স্লোগান দেন। রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের অন্যান্য শহরেও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন। ফিলিস্তিনিদের একটি শরণার্থী শিবিরের কাছের রাস্তায় পাঁচ হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী জড়ো হন।
ইরান, জর্ডান, মিসর, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় মার্কিন দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জেরুজালেমকে রক্ষার নতুন ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাস।
এদিকে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতির খবর বেশি সময় ধরে প্রচার না করতে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি নির্দেশ দিয়েছে সৌদি রয়েল কোর্ট। দেশটির রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের কাছে এ সংক্রান্ত নোটিস পাঠানো হয়েছে। জর্ডানে অবস্থিত সৌদি আরব ও ইসরায়েলের দূতাবাস থেকে দেশ দুইটির নাগরিকদের ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জর্ডানে আয়োজিত কোনও বিক্ষোভে অংশ না নিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে, মিডল ইস্ট মনিটর, ইন্ডিপেনডেন্ট।